লেবু দিয়ে পাকা চুল কালো করার উপায় বিস্তারিত জেনে নিন

আমাদের মধ্যে অনেকের অল্প বয়সেই চুল পেকে যায়। কম বেশি সকলের প্রায়ই চুল পাকা সমস্যাটি দেখা দিয়ে থাকে। তবে আপনাদের চিন্তিত হওয়ার কোন কারণ নেই, কারণ আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা লেবু দিয়ে পাকা চুল কালো করার উপায় ও চুল কালো করা তেলের নাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করব। আপনারা যদি ঘরোয়া উপায়ে চুল পাকা কালো করতে চান তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শুরু থেকে পড়বেন।
লেবু দিয়ে পাকা চুল কালো করার উপায় - চুল কালো করার তেলের নাম
পোস্টসূচিপত্রঃপ্রিয় পাঠক আপনারা যদি চুল কালো করে তেলের নাম ও লেবু দিয়ে পাকা চুল কালো করার উপায় সমূহ বিস্তারিত জানতে চান তাহলে এখনই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আজকের আর্টিকেলটিতে চুল পাকা কালো করার উপায় সমূহ আলোচনা করা হবে।

ভূমিকা

বর্তমানে চুল পাকা সমস্যাটি সকলের মধ্যে দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে কম বয়সে ছেলে মেয়েদের মধ্যেও চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা পাওয়া যাচ্ছে। চুল পেকে গেলে চুল সাদা হয়ে যায় যেটি দেখতে অনেকটা খারাপ লাগে। এই পাকা চুল আপনারা ঘরে বসেই কিছু উপায় অবলম্বন করে কালো করতে পারবেন। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের তেল ও ওষুধ বের হয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে মাথার পাকা চুল অনায়াসে কালো করা যায়। আপনারা চাইলে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন। তবে এ ধরনের ওষুধ গুলো ব্যবহার করার পূর্বে ঘরোয়া উপায়গুলো মেনে দেখতে পারেন। 
আরো জানুনঃ ত্বকের জন্য তিসির উপকারিতা 
লেবু দিয়ে পাকা চুল কালো করার উপায়টি ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে সবচেয়ে অন্যতম। এই উপায় অবলম্বন করে পাকা চুল কালো করা যায়। তাছাড়াও কিছু তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার মাথার সাদা চুল কালো করতে পারবেন। আজ আমরা পোস্টটিতে লেবু দিয়ে পাকা চুল কালো করার বিভিন্ন ধরনের উপায় আলোচনা করব। এছাড়াও পাকা চুল কিভাবে কালো করবেন তার বিস্তারিত উপায় সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।

লেবু দিয়ে পাকা চুল কালো করার উপায়

আমরা চাইলে লেবু ব্যবহার করে পাকা চুল কালো করতে পারবেন। লেবুর রসের সাথে বিভিন্ন ধরনের উপাদান মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করলে সামান্য পাকা চুল থাকলে তা কালো করা যায়। অতি কম বয়সে যাদের সামান্য পরিমাণ চুল পেকে গেছে তাদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিগুলো কার্যকর। তাছাড়া বয়স্ক ব্যাক্তিরাও চুলের কালার ঠিক রাখতে এবং উজ্জ্বলতা ঠিক রাখতে এই পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করতে পারেন। তবে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে লেবু দিয়ে পাকা চুল কালো করার উপায় গুলো জেনে নেই।

লেবুর রস ও নারিকেল তেলঃ পাকা চুল দূর করার জন্য বা কালো করার জন্য লেবুর রসের সাথে নারিকেল তেল মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। দুই চামচ নারিকেল তেলের সাথে ৪ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মাথার চুলে ব্যবহার করুন। এই মিশ্রণটি কমপক্ষে মাথার চুলের ২০ মিনিট ধরে মালিশ করবেন। এই পদ্ধতিতে কিছুদিন চুলে লেবুর রস ও নারকেল তেল মিশিয়ে একত্রে মালিশ করলে আপনার চুল কুচকুচে কালো হতে শুরু করবে। অল্প বয়সী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই উপায়টি খুবই কার্যকরী। কম বয়সী ব্যক্তিরা এই উপায় অবলম্বন করলে মাত্র ২০ দিনের মধ্যেই চুল কালো হতে শুরু করবে।

ক্যাস্টর অয়েল ও লেবুর রসঃ লেবুর রস অথবা লেবুর জুস এর সাথে ক্যাস্টর অয়েল মেশাবেন এবং তার সাথে মেহেদী মেশান। লেবুর রস , ক্যাস্টর অয়েল ও মেহেদী পরিমাণ মতো নিয়ে একত্রে মিশিয়ে মাথার চুলে সমানভাবে ব্যবহার করুন। মিশ্রণটি যখন চুলে শুকিয়ে যাবে তখন শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন। এভাবে কয়েক সপ্তাহ ব্যবহার করলে চুল পাকা অনেকটা কমে যায়।

লেবুর রস ও মধুঃ পাকা চুল কালো করার অন্যতম উপায় হল লেবুর রস ও মধু ব্যবহার করা। ২ চামচ লেবুর রসের সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে মাথার চুলের আগা এবং গোড়াতে লাগিয়ে ব্যবহার করুন। উক্ত মিশ্রণটি ভালোভাবে মাথায় লাগানো হয়ে গেলে যখন দেখবেন শুকিয়ে যাবে তখন ধুয়ে ফেলবেন। 
লেবু দিয়ে পাকা চুল কালো করার উপায়
তবে সাধারণত মিশ্রণটি লাগানোর ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললেই হবে। এজন্য আপনারা ৩০ মিনিট পর ভালো মানের শ্যাম্পু ও হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে মাথার চুল ধুয়ে ফেলুন। এই মিশ্রণটি কিছুদিন ব্যবহার করলে আপনার পাকা চুল কালো হয়ে যাবে।

ডিমের কুসুম ও লেবুর রসঃ চুলের যত্নে লেবুর রস খুব ভালোভাবে কাজ করে থাকে, ঠিক তেমনি ভাবে ডিমের কুসুম ব্যবহার করলে চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এই ডিমের কুসুম চুলকে চকচকে দেখাতে সাহায্য করে। এজন্য ডিমের কুসুম ও লেবুর রস একসাথে ব্যবহার করলে চুলের যত্নের ভালো ধরনের উপকার পাওয়া যায়। তাছাড়া চুল পেকে গেলে কালো করার জন্য এই উপায়টি ব্যবহার করতে পারেন। 

এজন্য প্রথমেই একটি ডিমের কুসুম নিবেন এবং তার সাথে ২ চা চামচ লেবুর রস ও পানি মিশিয়ে মিশ্রণটি তৈরি করুন। এবার উক্ত মিশ্রণটি চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে ম্যাসাজ করতে থাকুন। তারপর ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পরিষ্কার পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এভাবে ব্যবহার করলে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আপনার চুলে উন্নতি দেখতে পারবেন।

লেবুর রস এবং চাঃ বর্তমানে চুল কালো করার উপায় হিসেবে লেবুর রস ও চা অধিক পরিমাণে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কারণ চা উপাদানটিতে বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক পুষ্টি রয়েছে যেটি চুল কালো করতে সাহায্য করতে পারে। এক কাপ ঠান্ডা চায়ের সাথে কিছু পরিমাণ লেবুর রস মিশাবেন। এবার উক্ত মিশ্রণটি চুলে ব্যবহার করুন। চুলে কমপক্ষে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখবেন। এরপর শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলবেন। এভাবে আপনি যদি দুই থেকে তিন সপ্তাহ ব্যবহার করেন তাহলে দেখবেন আপনার পাকা চুলগুলো কালো হয়ে গেছে।

অলিভ অয়েল ও লেবুর রসঃ আপনারা হয়তো জানেন অলিভ অয়েল তেল চুলের জন্য কতটা উপকারী। এই তেল ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ করা যায়। চুল পড়া বন্ধ করতে এই তেল ভালো কাজ করে থাকে। তবে এই তেলের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুল পাকা কালো করা যায়। এই উপায়টি অনুসরণ করে আপনারা পাকা চুল কালো করতে পারবেন।

তবে এর জন্য মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। দুই চামচ লেবুর রসের সাথে সামান্য পরিমাণ অলিভ অয়েল তেল মেশাবেন। তবে তিন চামচ অলিভ অয়েল তেল মেশালে ভালো হয়। উপাদান দুটি মেশানো হয়ে গেলে মাথার চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে ব্যবহার করবেন। ৩০ মিনিট পর চুল পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিবেন। উক্ত মিশনটি কিছুদিন ব্যবহার করলে চুল কালো হতে শুরু করে।
তাহলে আশা করছি এই অংশটিতে আপনারা লেবু দিয়ে পাকা চুল কালো করার উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলেন। এখন সেই উপায়গুলো ভালোভাবে মেনে চলে ব্যবহার করুন তাহলেই আপনার পাকা চুল দূর করতে পারবেন এবং পাকা চুল অতি সহজেই কালো করা যাবে।

চুল কালো করার তেলের নাম

চুল পাকা কালো করার জন্য বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের তেল বের হয়েছে। তার মধ্যে বেশিরভাগ তেল গুলো সঠিকভাবে কাজ করে না। তাছাড়া অনেক ধরনের তেল রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করলে চুলে ক্ষতি হতে পারে। কারণ এসব তেলে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা থাকে যা মূলত চুলের জন্য ক্ষতিকর।

এজন্য আপনারা এসব কেমিক্যাল যুক্ত তেল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি তেল গুলো ব্যবহার করলে চুল কালো রাখা যায়। আমরা আপনাদের সামনে এখানে কিছু প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি ভালো মানের তেলের নাম তুলে ধরছি। যেগুলো ব্যবহার করে আপনারা অতি সহজে পাকা চুল কালো করতে পারবেন।

সরিষার তেলঃ এই তেলটি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি করা হয়। আর এতে কোন ধরনের ভেজাল বা কেমিক্যাল নেই। এজন্য এই তেলটি চুলের জন্য খুবই উপকারী। তাছাড়াও এই তেল রান্নায় ব্যবহার করে রান্না করা যায়। সরিষার তেলে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে যার ফলে এটি ব্যবহার করে চুলে সঠিক পুষ্টি উপাদান পায় এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। কোন ব্যক্তি যদি এই তেলটি নিয়মিত ব্যবহার করে তাহলে তার চুল উজ্জ্বল এবং কুচকুচে কালো থাকবে। 

আগেকার দিনে গ্রামের মানুষেরা এই সরিষার তেলটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করতো। তারা চুলের পাশাপাশি শরীরে এই তেল ব্যবহার করত। কারণ এই তেলে রয়েছে প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন ধরনের উপাদান যেটি চুলের পাশাপাশি শরীরেও ভালো ধরনের উপকার করে থাকে। তাই আপনারা বাজার থেকে ভালো মানের সরিষার তেল কিনে চুলে ব্যবহার করবেন তাহলে আপনার চুল ভালো থাকবে এবং চুল পাকা কমে আসবে।

নারিকেল তেলঃ আবার আপনারা নারিকেল তেল ব্যবহার করেও চুল ভালো রাখতে পারবেন। নারিকেল তেলের সাথে বিভিন্ন ধরনের উপাদান মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করলে ভালো ধরনের উপকার পাওয়া যায়। বিশেষ করে নারিকেল তেলের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে উক্ত তেল মাথায় ব্যবহার করলে চুল কালো হয়ে যায়। তাছাড়া এই নারিকেল তেল ও লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুলের খুশকি পর্যন্ত দূর করা যায়। 

আর আপনারা হয়তো জানেন চুলে খুশকি থাকলে চুল পড়তে থাকে। এজন্য যারা চুল পড়া বন্ধ করতে চান তারা নারিকেল তেল ও লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া নারিকেল সরাসরি চুলে ব্যবহার করতে পারেন। বর্তমানে মেয়েরা চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য নারিকেল তেল বেশি ব্যবহার করে থাকে। আপনার অবশ্যই বাজার থেকে অরজিনাল নারিকেল তেল কিনে ব্যবহার করবেন।

তিলের তেলঃ আমাদের দেশে তিলের তেল অধিক পরিমাণে উৎপাদন করা হয়ে থাকে। যার কারণে এই তেল সহজলভ্য এবং সকলেই কিনে ব্যবহার করতে পারে। আপনার পাকা চুল কালো করতে বা সাদা চুল কালো করার জন্য এ ধরনের তিলের তেল ব্যবহার করতে পারেন। বাজারে আপনারা এই তিলের তেল পেয়ে যাবেন। ডাক্তারের প্রায়ই তিলের তেল ব্যবহার করার জন্য বলে থাকেন। 

এই তিলের তেল আপনারা প্রতিদিন চুলের গোড়ায় ব্যবহার করবেন। তেল চুলের গোড়ায় লাগানোর পর 30 মিনিট হয়ে গেলে তখন চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার হতে থাকলে চুল কালো খাওয়া শুরু করে।

বাদামের তেলঃ আপনারা অনেকেই জানেন বাদাম থেকে তেল বের করা যায় অর্থাৎ বাদাম থেকে তেল উৎপাদন করা যায়। আর এই তেলকে বাদাম তেল বলা হয়ে থাকে। বাদাম তেলে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকায় এটি চুলের জন্য খুবই উপকারী। বাদাম তেলে রয়েছে প্রোটিন , ক্যালসিয়াম , ভিটামিন ই ,সেলেনিয়াম , ফাইবার , অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম ও এমাইনো এসিড যেটি চুলের স্বাস্থ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

অল্প বয়সে চুল পাকার সমস্যার সমাধান হিসেবে বাদামের তেল ব্যবহার করলে চুল পাকা দূর করা যায়। চুল পাকা কমাতে ডাক্তারের প্রায় সময়ই তিলের তেলের পাশাপাশি বাদামের তেল ব্যবহার করার কথা বলে থাকে। এজন্য আপনারা প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে চুলের গোড়ায় বাদাম তেল ব্যবহার করবেন তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই চুল কালো হয়ে যাবে।

চুল পাকা থেকে মুক্তির উপায়

আপনারা এতক্ষণে চুল কালো করার তেলের নাম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তবে এই তেল গুলো ব্যবহার না করেও চুলপাকা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আর এজন্য আপনাদের অবশ্যই চুল পাকা থেকে মুক্তির উপায় গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কিছু ভুলের কারণে চুল পাকার সমস্যাটি দেখা দিয়ে থাকে। তবে এই ভুলগুলো সংশোধন করে কিছু উপায় অবলম্বন করলে চুলপাকা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে চুল পাকা থেকে মুক্তির উপায় গুলো জেনে নেওয়া যাক।
  • চুল পাকার অন্যতম কারণ হলো টেনসনে থাকা। আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা সব সময় টেনশন ও স্ট্রেস থাকে যার কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের অসুখ দেখা দেয়। মাথায় সব সময় স্ট্রেস ও টেনশন থাকলে চুল পাকার সমস্যাটি দেখা দেয়। এজন্য আপনারা টেনশনমুক্ত ও স্টেস মুক্ত থাকার চেষ্টা করবেন। টেনশন মুক্ত থাকার জন্য বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডা ও মজার ভিডিও দেখতে পারেন।
  • আমাদের শরীরের জন্য মিনারেল যুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। কারণ এ ধরনের খাবার শরীরের শক্তি তৈরি করতে সহায়তা করে থাকে। আর এই মিনারেল যুক্ত খাবার কম বয়সে চুল পেকে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। এজন্য আপনারা চুল পাকা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত মিনারেল যুক্ত খাবার গ্রহণ করবেন।
  • শরীরের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা অবশ্যক। প্রতিদিন ব্যায়াম করলে শরীরের রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। তাছাড়াও মাথায় স্বাভাবিক রক্ত চলাচল না থাকলে চুল পেকে যেতে পারে। এজন্য শরীরে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল সচল রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন।
  • আপনারা অনেকেই জানেন ভিটামিন বি ও ভিটামিন ই চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য কার্যকরী উপাদান। এছাড়াও চুলের উজ্জ্বলা তো ঠিক রাখতে হবে এটি সহায়তা করে থাকে। এজন্য আপনারা প্রতিদিন নিয়মিত ভিটামিন বি ও ভিটামিন ই যুক্ত খাবার গ্রহণ করার চেষ্টা করবেন।
  • তাছাড়া জানা গেছে ঘুম কম হওয়ার কারণেও চুল পেকে যেতে পারে। একজন সাধারণ ব্যক্তির কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। তাই আপনারা পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাবেন।
  • চুল পাকা থেকে মুক্তির জন্য আপনাদের নিয়মিত প্রোটিন যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। প্রোটিন যুক্ত খাবারের অভাবে অনেকেরই কম বয়সে চুল পেকে যায়। এজন্য সচরাচর প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি করে গ্রহণ করবেন।
  • আর বেশি বেশি করে পানি পান করবেন। পানি কম পান করলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়। পানি পান করলে শরীরের অঙ্গ পতঙ্গ গুলো ভালো থাকে।
তাহলে আপনারা চুল পাকা থেকে মুক্তির কিছু উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারলেন। চুল পাকা কমাতে চাইলে অবশ্যই স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মেনে চলতে হবে। স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করলেই চুল পড়া কমানো যায় এবং চুল পাকা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

পাকা চুল কালো করার হোমিও ঔষধ

আপনার অনেকেই পাকা চুল কালো করার হোমিও ঔষধ এর নাম সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। এজন্য আমরা আপনাদের কথা বিবেচনা করে আজকের এই অংশে পাকা চুল কালো করার হোমিও ওষুধ গুলোর নাম সম্পর্কে তুলে ধরব। বর্তমানে বাজারে পাকা চুল কালো করার বিভিন্ন ধরনের তেল পাওয়া যায়। আপনারা চাইলে সেগুলো ব্যবহার করে চুল কালো করতে পারেন। তবে কিছু হোমিও ওষুধ রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করেও চুল কালো করা সম্ভব। 
তবে এ ধরনের হোমিও ওষুধ সবার ক্ষেত্রে ভালো মতো কাজ করে না। এটি ব্যক্তি বিশেষে ও অবস্থা ভেদে কাজ করে থাকে। এজন্য হোমিও ওষুধগুলো ব্যবহার করার জন্য হোমিও চিকিৎসালয় যেতে হয়। সেখানে আপনার চুল পাকার ধরন বুঝে হোমিও ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকবে। নিম্নে কিছু পাকা চুল কালো করার হোমিও ওষুধ গুলোর নাম তুলে ধরা হলোঃ
  • Phosphorus 30C
  • Silicea
  • Lycopodium Clavatum
উপরোক্ত হোমিও ওষুধগুলো পাকা চুল কালো করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে আপনারা এটি সরাসরি ব্যবহার করবেন না। ভালো হোমিও চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে উপরোক্ত ওষুধ গুলো ব্যবহার করবেন।

চুল কালো করার সেম্পু

চুল কালো করার বিভিন্ন ধরনের শ্যাম্পু রয়েছে। তবে সে সেগুলো সচরাচর ভালোমতো কাজ করে না। তবে আপনারা চাইলে ব্যবহার করতে পারেন। এ ধরনের শ্যাম্পুগুলো সাধারণত সাময়িকভাবে চুল কালো করে থাকে। তাই আমার মতে এগুলো না ব্যবহার করাই ভালো। চুল কালো করা শ্যাম্পু এর নামঃ
  • গার্নিয়ার মেন শ্যাম্পু হেয়ার কালার
  • মাণি স্বাক্ষর ডেক্স ব্ল্যাক হেয়ার শ্যাম্পু
  • থাই ব্ল্যাক হেয়ার শ্যাম্পু
  • Dexe Hair Color Shampoo
  • Subaru magic black hair sampoo
আমরা চাইলে উপরের দেওয়া শ্যাম্পু গুলো চুল কালো করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। তবে এগুলো আপনারা আসল ও নকল প্রোডাক্ট দেখে কিনবেন। কারণ বাজারে অনেক ধরনের নকল প্রোডাক্ট বের হয়েছে যেগুলো ব্যবহার করলে চুলের ক্ষতি হতে পারে। এজন্য শ্যাম্পু গুলো অরজিনাল কিনা তা দেখে কিনবেন।

চা পাতা দিয়ে চুল কালো করার উপায়

চা পাতা ব্যবহার করেও চুল কালো করা যায়। তবে আপনাদের চা পাতা দিয়ে চুল কালো করার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। আর আমরা এখন চা পাতা দিয়ে চুল কালো করার কিছু উপায় আলোচনা করব। চা পাতা দিয়ে চুল কালো করার উপায় সমূহ হলোঃ

চুলের স্বাভাবিক উজ্জলতা ও কালো ভাব ধরে রাখার জন্য চায়ের লিকার দিয়ে কন্ডিশনার বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমে চা পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে নিবেন। তারপর ঠান্ডা হয়ে গেলে তা ছেঁকে লেবুর রস মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করুন। এটি আপনার চুল অনেকটা কন্ডিশনার এর মত কাজ করবে। প্রতিদিন ব্যবহার করলে চুলের কালো ভাব বাড়তে থাকবে।
অনেকে আছেন যারা টি প্যাক ব্যবহার করে চা খেয়ে থাকেন। চা বানানোর পর চায়ের প্যাকটি ফেলে না দিয়ে সংরক্ষণ করুন। এবার সেই চায়ের প্যাকটি ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে ভিতর থেকে চা গুড়া বের করে মাথায় ব্যবহার করুন তাহলে কিছুদিন পর খুশকি দূর হয়ে যাবে এবং চুলের উজ্জ্বল ভাব বেড়ে যাবে।
তাছাড়া ও পাকা চুল কালো করতে চাইলে চা পাতার সাথে হেনার রস মিশিয়ে মিশন তৈরি করে মাথায় ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহার করলে অল্প বয়সে চুলপাকা সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কম বয়সে চুল পাকা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে এই উপায়টি অবলম্বন করুন। এভাবে আপনারা চা পাতা দিয়ে চুল কালো করতে পারবেন।

চুল কালো করার উপায় সম্পর্কিত সাধারণ জিজ্ঞাসা(FAQ)

প্রশ্নঃঅল্প বয়সে চুল পেকে গেলে কি করতে হবে?
উত্তরঃ অল্প বয়সে চুল পেকে গেলে প্রতিদিন নারিকেল তেলের সাথে সামান্য পরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করুন। তাহলে কিছুদিন পর চুলপাকা সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

প্রশ্নঃলেবুর রস খেলে কি চুল দ্রুত বাড়ে?
উত্তরঃ লেবুর রস খেলে চুল দ্রুত বাড়ে না। তবে লেবুর রস চুলে ব্যবহার করলে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। লেবুর রস বিভিন্ন উপাদানের সাথে মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করে চুল কালো করা যায়।

প্রশ্নঃচুল থেকে লেবুর রস বের করার উপায়?
উত্তরঃ আপনারা যদি চুলে লেবুর রস ব্যবহার করে থাকেন তাহলে সেটি আপনি পানি দিয়ে চুল পরিষ্কার করে লেবুর রস বের করতে পারবেন। লেবুর রসের মিশ্রণ চুল থেকে বের করার জন্য ঝর্ণায় গোসল করতে পারেন বা চুলে পানি প্রয়োগ করে হাত দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন।

প্রশ্নঃলেবুর রস ও কন্ডিশনার চুলে কতক্ষণ রাখবেন?
উত্তরঃ লেবুর রস ও কন্ডিশনার চুলে কমপক্ষে আধা ঘন্টা অথবা ২৫ মিনিট রাখতে পারেন। এরপর ভালোভাবে পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলবেন।

প্রশ্নঃলেবু চুলে কতক্ষণ রাখা উচিত?
উত্তরঃ লেবু চুলে সরাসরি ব্যবহার করলে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখতে পারেন। তবে বেশি সময় ধরে রাখলেও কোন ধরনের সমস্যা নেই। কিন্তু লেবুর সাথে অন্য কোন উপাদান মিশিয়ে ব্যবহার করলে সেটি কমপক্ষে ৩০ মিনিট ধরে ব্যবহার করবেন।

শেষ কথা

আশা করছি প্রিয় বন্ধুরা আজকের এই সম্পূর্ণ পোস্টে আপনারা ভালোভাবেই লেবু দিয়ে পাকা চুল কালো করার উপায় ও চুল কালো করার তেলের নাম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে গেছেন। তাছাড়াও আমরা আপনাদের জন্য পোস্টটিতে চুল কালো করার হোমিও ওষুধের নাম সম্পর্কে আলোচনা করেছি। যেগুলো আপনারা চিকিৎসকের নিকট পরামর্শ করে ব্যবহার করতে পারেন। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য নিয়মিত চুলের যত্ন নিন তাহলেই একমাত্র চুল পেকে যাওয়া রোধ করা সম্ভব।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

বিজ্ঞাপন