সবচেয়ে বেশি ডিম দেয় কোন মুরগি বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন
আপনারা অনেকেই মুরগি পালন করে লাভবান হতে যান। বিশেষ করে মুরগি পালন করে ডিমের ব্যবসা করতে চান। তাহলে আপনাকে অবশ্যই ভালো মানের মুরগি নির্বাচন করতে হবে আর আপনাকে জানতে হবে সবচেয়ে বেশি ডিম দেয় কোন মুরগি। এজন্য আমরা আজকের এই আর্টিকেলটিতে সবচেয়ে বেশি ডিম দেয় কোন মুরগিগুলো এবং কোন মুরগি কত দিনে ডিম দেয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
তাই প্রিয় , কৃষক ভাইয়েরা আপনারা যদি কোন মুরগি কত দিনে ডিম দেয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে এখনি পোস্টটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্টসূচিপত্রঃ
ভূমিকা
বর্তমানে মুরগি পালন করে মুরগির ডিম ব্যবসা করা এটি লাভজনক ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরা মুরগির ডিমের ব্যবসা করে থাকে। তবে মুরগির ডিমের ব্যবসা করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে কোন মুরগি কি পরিমাণ ডিম দেয় সে সম্পর্কে। বিশেষ করে নতুন ব্যবসায়ীরা কোন মুরগি বেশি ডিম দেয় সে সম্পর্কে জানে না।
আরো জানুনঃ সোনালি মুরগির ওজন বৃদ্ধির উপায়
তাদের ক্ষেত্রে লাভজনক হওয়া সম্ভব নয় তাই তাদের অবশ্যই মুরগির সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে সবচেয়ে বেশি ডিম দেয় কোন মুরগি এবং কোন মুরগি সুস্থ সবল ও কত দিনে ডিম দেয় এ সম্পর্কে জেনে মুরগির ডিমের ব্যবসা করতে হবে। তাহলে একমাত্র লাভবান হওয়া যাবে। আর এ সম্পর্কে আমরা আজকের পোস্টটিতে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। তাই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিস্তারিত তথ্য জানতে আমাদের সাথে থাকুন।
সবচেয়ে বেশি ডিম দেয় কোন মুরগি
আপনারা হয়তো এতক্ষণে এই অংশের জন্যই বেশি অপেক্ষা করে বসে আছেন। কারণ আমরা এই পাঠে সবচেয়ে বেশি ডিম দেয় কোন মুরগি এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। তাই এ সম্পর্কে জানতে এই অংশটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আপনাকে সর্বপ্রথম মুরগি পালন পদ্ধতি জানতে হবে তার উপর নির্ভর করে কোন মুরগি আপনার জন্য ভালো হবে এবং সেটি বেশি ডিম দেবে কিনা সে সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন আমরা নিম্নে সবচেয়ে বেশি ডিম দেয় এমন মুরগির নাম জেনে আসি।
- হাইব্রিড লেয়ার মুরগি
- ফাউমি মুরগি
- আর.আই.আর মুরগি
- আইএসএ ব্রাউন
- সোনালি মুরগি
- হোয়াইট লেগহর্ন
- গ্রামপ্রিয়া
উপরোক্ত লিস্টে আমরা বেশি ডিম দেওয়া কয়েকটি মুরগির নাম তুলে ধরেছি। যেগুলো সাধারণত বেশি ডিম দিয়ে থাকে। চলুন সেই মুরগী গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে আসি।
হাইব্রিড লেয়ার মুরগি
আপনি যদি বাণিজ্যিকভাবে মুরগির ডিমের ব্যবসা করতে চান তাহলে সবচেয়ে বেশি ডিম দেয় হাইব্রিড লেয়ার মুরগি। এটি লালন পালন করতে পারেন অর্থাৎ এর খামার দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই মুরগী সাধারণত বছরের প্রায়ই ৩৫০ টি ও বেশি ডিম দিয়ে থাকে। যদি শতাংশ কথা চিন্তা করেন তাহলে বলতে হয় এই মুরগি প্রায় 95% ডিম দেয়। তবে এই মুরগিকে আপনাকে লালন পালন করার জন্য বিশেষ পরিচর্যা ও সঠিক খামার ব্যবস্থা করতে হবে।লেয়ার মুরগির সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। এর মধ্যে একটি হলো সাদা লেয়ার মুরগি , আর আরেকটি হলো লাল লেয়ার মুরগি।
এই দুটোই সবচেয়ে বেশি ভালো ডিম দিয়ে থাকে। তবে এই দুটোর মধ্যে সাদা লেয়ার মুরগিটি বেশি ডিম দিয়ে থাকে। তবে জাত অনুযায়ী লেয়ার মুরগির বিভিন্ন রকমের রয়েছে। এর মধ্যে থেকে এ দেশের সাধারণত BB ৩০০ জাতের লেয়ার মুরগি সবচেয়ে ভালো বেশি ডিম দিয়ে থাকে। এসব মুরগীর বাচ্চা সাধারণত আমাদের দেশে উৎপাদন করা হয়ে থাকে তাই আপনারা বিভিন্ন খামার বা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে এসব মুরগির বাচ্চা সংগ্রহ করতে পারবেন।
ফাউমি মুরগি
দেশি মুরগির মধ্যে ফাওমি মুরগি বেশি ডিম দিয়ে থাকে। এই ফাউমি মুরগি সাধারণত বছরের প্রায়ই ৩২০ থেকে ৩৩০ টি উপরে ডিম পেড়ে থাকে। এই মুরগির ডিমের আকার সাধারণত একটু ছোট হয়ে থাকে। তবে এই মুরগির ডিম দেওয়ার হার অনেকটা ভালো। এই মুরগী গুলো আপনারা সহজেই লালন পালন করতে পারবেন কারণ দেশি মুরগি হিসাবে এটি আবদ্ধ পদ্ধতিতে খুবই মানানসই। এই মুরগিগুলোর বাচ্চা আপনারা বিভিন্ন সরকারি কৃষি প্রতিষ্ঠানে পেয়ে যাবেন।
আরো জানুনঃ থিয়োভিট এর কাজ কি
যেখানে তারা সরকারিভাবে কৃষি উন্নয়নের জন্য এসব মুরগির বাচ্চা সরবরাহ করে থাকে। আপনারা তাদের কাছ থেকে কিনতে পারবেন অথবা সংগ্রহ করতে পারবেন। তাছাড়া বিভিন্ন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও খামার রয়েছে যারা এসব মুরগীর বাচ্চা উৎপাদন করে থাকে তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।
আর.আই.আর মুরগি
আপনারা যারা নতুন মুরগির ডিমের ব্যবসা করতে চান তাদের ক্ষেত্রে বেশি ডিম পাড়া মুরগি হিসাবে আর.আই.আর মুরগি লালন পালন করতে পারেন। এই মুরগিটিও বেশি ডিম দিয়ে থাকে। এটি বছরের প্রায় ২৭০ টি থেকে ৩০০ টি ডিম দিয়ে থাকে। আর এই মুরগির অন্যতম সুবিধা হল এই মুরগিটি পরিচর্যা করা সহজ এবং খামারে অতি সহজেই লালন পালন করা যায়।
তাছাড়া ওই মুরগিগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হয়ে থাকে। এজন্যই তেমন অধিক পরিচর্যা করার প্রয়োজন পড়ে না। এই মুরগির বাচ্চাগুলো আপনারা বিভিন্ন হাঁস মুরগির খামারে পেয়ে যাবেন। তাছাড়া সরকারি হাঁস মুরগির অধিদপ্তরে পেতে পারেন। এছাড়াও অনেক ব্যবসায়ীরা এই মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করে থাকে তাদের কাছ থেকেও সংগ্রহ করতে পারবেন।
আইএসএ ব্রাউন
এই মুরগিগুলো সাধারণত বিভিন্ন ধরনের কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্রস ব্রিডিং করার মাধ্যমে এসব মুরগি জাত উদ্ভাবন করে থাকে। যার ফলে এই মুরগিগুলো উন্নত জাতের হাইব্রিড মুরগির মত উন্নয়ন হয়। এই মুরগির জাত সাধারণত বেশি ডিম দিয়ে থাকে। এই মুরগিগুলো বছরে প্রায় ২৫০ থেকে ৩২০ টি পর্যন্ত ডিম দিতে পারে। এই মুরগির আরেকটি উন্নয়ন জাত রয়েছে তার নাম হলো শুভ্র। এটিও প্রায় ২৮০ থেকে শুরু করে ৩৩০ টি পর্যন্ত ডিম দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে।
এই মুরগিটি দেখতে লালচে বাদামী রঙের। মুরগির ওজন সাধারণত ২ কেজির উপরে এবং ডিমের রং সাধারণত বাদামি কালার হয়ে থাকে। এসব মুরগির বাচ্চাগুলো আপনারা বিভিন্ন কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে সংগ্রহ করতে পারেন তাছাড়া ও সরকারিভাবে বিভিন্ন সরকারি খামার থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
সোনালি মুরগি
আমরা যারা মুরগির মাংস খাই তারা কম বেশি সকলেই এই মুরগি চিনে থাকি। এই সোনালি মুরগি আমরা সকলেই জানি এ সম্পর্কে। এই মুরগিটিও বেশি ডিম দিয়ে থাকে। এই মুরগির মাংসের স্বাদ প্রায় দেশি মুরগির মত এবং সুস্বাদু যার ফলে আমরা এই মুরগি নাম জানি। বর্তমানে এই মুরগিটি সাধারণত মাংস উৎপাদন করা হিসেবে খামারীরা লালন পালন করে থাকে।
তবে যারা ডিমের ব্যবসা করে থাকেন তারা এখন বর্তমানে সোনালী মুরগি খামার করে ডিমের ব্যবসা করছে। কারণ এই মুরগির ভিডিও ২০০ থেকে ২৫০টির উপরে ডিম দিয়ে থাকে। অর্থাৎ এই মুরগির ডিম দেওয়ার হার প্রায় ৭৫%। এই মুরগির বাচ্চা অতি সহজেই বিভিন্ন খামার থেকে পেয়ে যাবেন।
হোয়াইট লেগহর্ন
বাণিজ্যিকভাবে মুরগির ডিমের ব্যবসা করতে চাইলে আপনি হোয়াইট লেগহর্ন জাতের মুরগিটি লালন পালন করতে পারেন। এটি ডিম দেয়ার জন্য অধিক জনপ্রিয় এবং অন্যতম। এই মুরগিটি বছরের প্রায় অনেক ডিম পাড়তে পারে। এই মুরগির ওজন সাধারণত দুই থেকে তিন কেজি হয়ে থাকে। মুরগি পালকের রং সাধারণত সাদা তবে মাঝে মাঝে অন্য রঙের দেখা যায়।
আর ডিমের রঙ সাদা হয়ে থাকে। আর এই মুরগিটি বছরে প্রায় ৩০০ থেকে ৩৩০ পিস ডিম দিয়ে থাকে। মাঝে মাঝে কম বেশি ডিম দিয়ে থাকে তবে ডিম দেওয়ার ক্ষমতা বেশি হয় অধিক ডিম দিয়ে থাকে। এই মুরগিগুলো আপনারা বিভিন্ন খামারে অথবা সরকারি কৃষি গবেষণায় পেয়ে যাবেন।
গ্রামপ্রিয়া
আপনারা যদি গ্রামে খোলা পরিবেশে কোনরকম পরিচর্যা ছাড়া ডিম উৎপাদন করতে চান তাহলে এই মুরগিটি লালন পালন করতে পারেন। এই মুরগি লালন পালনের জন্য কোন বিশেষ পরিচর্যা করতে হয় না। অতি সহজেই পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। এই মুরগি বাচ্চা হওয়ার পর বাচ্চা গুলোর বয়স ৩৪ সপ্তাহ হওয়ার পরপরই ডিম দিতে শুরু করে।
এই মুরগিগুলোর ওজন সাধারণত একটু কম হয়ে থাকে। ওজন প্রায় ১.৫-১.৮ কেজি হয়ে থাকে। আর পালকের রঙ সাধারণত বাদামি কালার হয়। অসাধারণ তো এই মুরগিগুলো বছরে প্রায় ১৮০ টি থেকে ২৩০ টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। আপনার এই মুরগিগুলো বিভিন্ন খামারে পেয়ে যাবেন।
আশা করছি আপনারা সবচেয়ে বেশি ডিম দেয় কোন মুরগি এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে গেছেন। এখন আপনার অতি সহজেই মুরগির ডিমে ব্যবসা করে সফল হতে পারবেন। আর এজন্য আপনাদের অবশ্যই উক্ত পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
কোন মুরগি কত দিনে ডিম দেয়
আপনারা যারা নতুন মুরগির খামারে গড়ে তুলতে চান অর্থাৎ মুরগির ডিমের ব্যবসা করতে চান তারা অনেকেই আমাদের কাছে প্রশ্ন করে থাকেন কোন মুরগি কত দিনে ডিম দেয়। আর এজন্য আমরা আজকের এই অংশটিতে কোন মুরগি কত দিনে ডিম দিয়ে থাকে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
আরো জানুনঃ গরু মোটাতাজাকরণ ভিটামিন ঔষধের নাম
প্রথমে যদি আমরা হাইব্রিড লেয়ার মুরগির কথা ধরি তাহলে এই মুরগিটি ১৮ থেকে ১৯ সপ্তাহ বয়স থেকে ডিম দেওয়া শুরু করে। আর এই মুরগিটি একটানা কমপক্ষে ৯০ থেকে ১০০ সপ্তাহ পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। তারপর থেকে এই মুরগির ডিম দেওয়ার হার আস্তে আস্তে কমা শুরু করে। তবেই মুরগিটির ক্ষেত্রে ১৮ সপ্তাহ পরে ডিম দেওয়ার জন্যই মুরগির ওজন হতে হবে ১.২-১.৩ কেজি পর্যন্ত। আর অবশ্যই লেয়ার মুরগির সঠিক খাদ্য তালিকা দিতে হবে। মুরগির ডিম পাড়ার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা করে তুলতে হবে এবং পানি সরবরাহ ভালোভাবে করতে হবে।
এবার চলুন দেশি মুরগি কথা চিন্তা করা যাক। দেশি মুরগিগুলো সাধারণত ৫ থেকে ৬ মাস বয়সে ডিম দেওয়া শুরু করে থাকে। তবে আপনি যদি দেশি মুরগির খাদ্য তালিকায় ভালো মানের পুষ্টিকর খাবার রাখেন তাহলে এটি পাঁচ মাস বয়সের আগেই ডিম দেওয়া শুরু করবে। তাছাড়াও সাধারণত দেখা গেছে উন্নত জাতের দেশি মুরগিগুলো প্রায় তিন বছরের মত টানা ডিম পাড়তে থাকে।
এবার চলুন সোনালি মুরগির সম্পর্কে জেনে আসি। সোনালী মুরগির সাধারণত ১৯ সপ্তাহ অথবা সাড়ে চার মাস বয়স থেকে ডিম দেওয়া শুরু করে। তবে যদি খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার দেয়া হয় তাহলে আরো তাড়াতাড়ি ডিম দিতে পারে। তবে এই মুরগির ভালো ডিমের জন্য লাইটিং কৃত্রিম ব্যবস্থা থাকতে হবে।
আর ফাওমি মুরগি সাধারণত ৫ মাস বয়স থেকে ডিম দেওয়া শুরু করে। আর এই মুরগি ভালো ডিম দিয়ে থাকে। অর্থাৎ বেশি পরিমাণে ডিম দিয়ে থাকে। তাছাড়া এই মুরগিগুলো দীর্ঘদিন একটানা ডিম পাড়া শুরু করে। আর এই মুরগি বছরে কয়টি ডিম পাড়ে তা সম্পর্কে আমরা উপরে জেনে এসেছি।
আর বয়লার মুরগি সাধারণত লেয়ার মুরগির মতোই পাঁচ মাস বয়স থেকে ডিম দেওয়া শুরু করে। এবং এই মুরগিগুলো অতি সহজে একটানা ডিম দিতে পারে। এবং অধিক ডিম দিয়ে থাকে। আর যদি টাইগার মুরগির কথা ধরেন তাহলে টাইগার মুরগির সাধারণত ১৮ সপ্তাহ বয়স হওয়ার পর থেকে ডিম দিতে শুরু করে। আর যদি টাইগার মুরগির খাবার তালিকা ভালো করে জেনে তাদের ভালো খাদ্য দেন তাহলে এটি ১৮ সপ্তাহ হওয়ার আগেই ডিম দিতে শুরু করে।
ডিম উৎপাদনকারী মুরগির বৈশিষ্ট্য সমূহ
আপনারা হয়তো এতক্ষণে সবচেয়ে বেশি ডিম দেয় কোন মুরগি এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে এসেছেন। তবে আপনাদের অবশ্যই জানা উচিত কোন মুরগি কখন ডিম দিবে এবং মুরগি ডিম দেওয়ার বৈশিষ্ট্যগুলো জানতে হবে যাতে করে আপনি বুঝতে পারেন মুরগি কখন ডিম পারবে। চলুন আমরা সেই বৈশিষ্ট্য গুলো জেনে আসি। আর জানবেন ডিম পাড়া মুরগিগুলো কি কি বৈশিষ্ট্য বহন করে।
- একটি ভালো মানের মুরগির বৈশিষ্ট্য হতে সেটি পরিমাণ মতো সুষ্ঠু খাবার খাবে এবং নিয়মিত ডিম দিয়ে থাকবে এবং তার ডিমের উৎপাদন খরচ কম হবে।
- এসব মুরগিগুলো সাধারণ দেশি মুরগি তুলনায় অথবা সাধারণ মুরগি তুলনায় খুব দ্রুত ডিম দিবে অর্থাৎ কম বয়সে ডিম দিবে।
- আর এ ধরনের মুরগিগুলোর টানা ডিম পাড়তে থাকলে ধারাবাহিকভাবে ডিমের ওজন একই থাকবে কোন পরিবর্তন ঘটবে না।
- ডিমের খোসা গুলো সাধারণত একটু ভালো মানের হবে যাতে করে ডিম নাড়াচাড়া করা যায় অর্থাৎ বাজারে গিয়ে বিক্রি করা যায়।
- যেকোনো বিরূপ আবহাওয়ায় মুরগিগুলো সঠিকভাবে ডিম দিতে পারবে অর্থাৎ আবহাওয়া মুরগির উপর কোন প্রভাব ফেলবে না ডিম পাড়াতে।
- এছাড়াও ভালো মানের মুরগিগুলো অবশ্যই সাধারণ মুরগি অপেক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে ডিম পাড়তে থাকবে।
আশা করছি আপনারা ডিম পাড়া মুরগির বৈশিষ্ট্য গুলো জেনে গেছেন। এখন আপনারা যদি ভালো মুরগি নির্বাচন করতে চান তাহলে এই বৈশিষ্ট্য গুলো যে মুরগির মধ্যে আছে সেগুলো নির্বাচন করে ক্রয় করুন।
বেশি ডিম দেয়া মুরগি চেনার উপায়
আপনার অনেকে যারা নতুন মুরগির ডিম ব্যবসায়ী তারা আমাদের কাছে প্রশ্ন করে থাকেন বেশি ডিম দেওয়া মুরগি চেনার উপায় কি। আজ আমরা এই অংশে বেশি ডিম দেওয়া মুরগি চেনার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন আমরা এবার জেনে নেই বেশি ডিম দেয় এমন মুরগির বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি।
- যে মুরগিগুলো সাধারণত বেশি ডিম দেয় তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই মুরগির মাথা ছোট এবং হালকা হতে হবে। মুরগি গুলোর মাথার অংশ নরম ও সুগঠিত হবে।
- তারাও বেশি ডিম দেওয়া মুরগিগুলোর চোখ মুখ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে। এবং চোখগুলো সচ্ছল দেখাবে। এছাড়াও নাক মুখ শ্লেষামুক্ত থাকবে।
- এসব মুরগী গুলোর দেহ সাধারণ সুগঠিত এবং বেশি ওজনের হবে। তাছাড়া সঠিকভাবে খাবার গ্রহণ করবে এবং পেটে যদি ডিম থাকে তাহলে মুরগির ওজন ভারী মনে হবে।
- এছাড়াও বেশি ডিম পাড়া মুরগিগুলো অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাস্থ্যের শরীর হতে হবে অর্থাৎ এই মূলগুলো সাধারণত চটপটে হয়ে থাকে সারাক্ষণ খাবারে খুঁজে থাকে। আর অসুস্থ মুরগি ঝিমিয়ে থাকে এগুলো মুরগি ক্রয় করা থেকে বিরত থাকুন।
তাহলে আপনারা ভালো ডিম পাড়া মুরগি চেনার বৈশিষ্ট্য গুলো জেনে গেলেন। এখন আপনারা খুব সহজেই ভালো মানের ডিম পাড়া মুরগি নির্বাচন করতে পারবেন এবং লাভজনক ডিমের ব্যবসা করতে পারবেন।
সবচেয়ে বেশি ডিম দেয় কোন মুরগি সম্পর্কিত সাধারণ জিজ্ঞাসা(FAQ)
প্রশ্নঃসবচেয়ে বেশি ডিম উৎপাদনকারী মুরগির নাম কি?
উত্তরঃ সবচেয়ে বেশি ডিম উৎপাদনকারী মুরগির নাম হলো হাইব্রিড লেয়ার মুরগি। তাছাড়াও স্বর্ণা মুরগি নামে এক প্রকার জাতের মুরগি রয়েছে যেটিও সবচেয়ে বেশি ডিম দিয়ে থাকে।
প্রশ্নঃকোন মুরগি সবচেয়ে ভালো ডিম পাড়ে?
উত্তরঃ সবচেয়ে ভালো ডিম পারে মুরগির নাম হলোঃ
- হাইব্রিড লেয়ার মুরগি
- আইএসএ ব্রাউন
- সোনালি মুরগি
- আর.আই.আর মুরগি
- হোয়াইট লেগহর্ন
- ফাউমি মুরগি
প্রশ্নঃকোন মুরগি প্রতিদিন সবচেয়ে বেশি ডিম পাড়ে?
উত্তরঃ এক সূত্রে জানা গেছে সাদা লেগহর্ন মুরগি প্রতিদিন সবচেয়ে বেশি ডিম পাড়ে। তবে এটি নির্ভর করে মুরগির খাবার তালিকা উপরে। সঠিক পুষ্টি পেলে মুরগি বেশি করে ডিম দেওয়া শুরু করবে।
প্রশ্নঃডিম পাড়া মুরগির দাম কত?
উত্তরঃ ডিম পাড়া মুরগির দাম সাধারণত প্রতি পিস ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা হয়ে থাকে। তবে দামের সামান্য পার্থক্য দেখা দিতে পারে। এজন্য বাজার থেকে সঠিক দামটি জেনে নিবেন।
প্রশ্নঃমুরগি পালন করতে কি কি লাগে?
উত্তরঃ মুরগি পালন করতে খাচা , মুরগির খাবার তৈরি উপাদান, পানির পাত্র, বাতাসের জন্য ফ্যান ইত্যাদি সহ অনেক ধরনের বস্তু বা জিনিস লাগে।
শেষ কথা
আশা করছি পাঠক আপনারা এতক্ষণে হয়তো সবচেয়ে বেশি ডিম দেয় কোন মুরগি এবং কোন মুরগি কত দিনে ডিম দেয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে গেছেন। এর ফলে যারা নতুন ব্যবসায়ী তারা অতি সহজেই ভালো মানের ডিম দেওয়া মুরগি গুলো কিনে মুরগির ডিমের ব্যবসা করতে পারবেন। ফলে আপনারা মুরগির ডিমের ব্যবসা করে লাভজনক হতে পারবেন।
এছাড়াও এসব মুরগী সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। যার ফলে আপনারা এখন অতি সহজে মুরগির খামার গড়ে তুলতে পারবেন। আশা করছি আপনাদের ভাল লেগেছে। অন্যদের জানাতে এবং কৃষি সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলতে পোস্টটি শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।