Telegram group

ordinarybdgnews

হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা জেনে রাখুন

আপনার অনেকে হয়তো হাতিশুর গাছের নাম শুনেছেন। কিন্তু এই গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। তাদের জন্য আমরা আজকের আর্টিকেলটিতে হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম ও হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরব।
হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
পোস্টসূচিপত্রঃপ্রিয় পাঠক আপনারা যদি হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

উপস্থাপনা

হাতিশুর গাছ সাধারণত ঔষধি গুনসম্পন্ন একটি গাছ। এই গাছের পাতা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। হাতিশুর গাছ অনেক সময় পুরনো বিল্ডিংয়ের দালান ঘেঁসে দেখা যায়। আবার রাস্তার পাশে বিভিন্ন গাছের আগাছার মাঝখানে এই গাছটি হতে দেখা যায়। মূলত এই গাছ বিভিন্ন আগাছা জনিত জায়গায় হয়ে থাকে। 
বিশেষ করে রাস্তার পাশে অথবা পুরনো বাড়ির পাশে দেখা যায়। এই গাছের পাতাগুলো বাঁকানো দন্ডের মত এবং গাছের বাঁকানো দন্ডে থাকে সাদা রঙের ফুল। গাছের ফুলগুলো হাতির সুরের মতো দেখা যায় এজন্য এই গাছটিকে হাতিশুর গাছ বলা হয়ে থাকে। তবে এই হাতিশুর গাছ ১ থেকে ১.৫ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম হেলিও ট্রাপিয়াম ইন্ডিকাম। এ ধরনের গাছগুলো আপনারা বিভিন্ন পরিত্যক্ত জায়গায় অথবা জঙ্গলে অনেক কম পাওয়া যায়। 
সচরাচর এই ধরনের গাছ খুঁজে পাওয়া যায় না। এই গাছের শিকড়ের অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে। এজন্য আপনারা যদি হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে শিকড় খেয়ে থাকেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাবেন। আর এ নিয়ম জানার জন্য আজকের পোস্টটিতে আমরা গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করব। হাতিশুর গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম 

আপনারা হয়তো হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতেই এতক্ষণ ধরে অপেক্ষা করে আছেন। তবে আপনাদের কথা চিন্তা করে এখন আমরা এই অংশে হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার উপায় ও নিয়ম গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনারা যদি নিয়ম মেনে এই গাছের শিকড় খেয়ে থাকেন তাহলে ভালো ধরনের উপকার পাবেন এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় করতেও ভালো কাজ করে থাকে এই গাছটি। এই গাছটি ঔষধি গুন সম্পন্ন হওয়ায় বিভিন্ন রোগে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শিকড় খাওয়ার নিয়ম গুলো জেনে নেই।
  • এই গাছের পাতা বেটে রস করে হালকা গরম করে শরীরের ফোলা জায়গায় ব্যবহার করতে পারেন। মূলত শরীরে কোন জায়গা ফোলে গেলে এই গাছের পাতা রস করে হালকা গরম করে ফোলা জায়গায় স্থানে ব্যবহার করতে হবে।
  • তাছাড়াও শরীরের ব্যথা জনিত স্থানে এটি ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য এ গাছের পাতা বেটে রস করে ব্যথা জড়িত স্থানে ভালোভাবে মালিশ করবেন।
  • আপনার শরীরে যদি কখনো বিষাক্ত পোকা কামড় দিয়ে থাকে তাহলে জ্বালাপোড়া কমাতে হাতিশুর গাছের পাতা রস করে লাগালে জ্বালাপোড়া ও ফোলা কমে যায়।
  • এছাড়াও কারো যদি টাইফয়েড জ্বর হয়ে থাকে তাহলে পাতা বেটে রস করে গরম করতে হবে এবং গরম করার পর রস ছেঁকে পানি মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন।
  • হাতিশুর গাছের খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী সকালে আপনারা এই গাছের পাতার রস ছেঁকে গরম করে খেতে পারেন।
তাহলে আশা করছি আপনারা হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে গেছেন। এই গাছের শিকড় খাওয়ার জন্য আপনাদের অবশ্যই পাতাগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর পাতাগুলো বেটে রস করে বিভিন্নভাবে খেতে পারেন। তাছাড়া ও গাছের শিকড় বেটে রস করে গরম করে পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।

হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা - হাতিশুর গাছের পাতার উপকারিতা

হাতিশুর গাছ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তাছাড়া এই গাছের বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। আপনারা অনেকে আমাদের কাছে হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। তাদের কথা বিবেচনা করে আমরা আজকের এই অংশে হাতিশুর গাছের উপকারিতা গুলো আলোচনা করব। এবার আমরা হাতিশুর গাছের উপকারিতা গুলো জেনে নেই।
  • আপনার দেহে যদি ছত্রাক জনিত সংক্রমণ হয়ে থাকে এবং শরীরের লাল চাকা দাগ দেখা যায় তাহলে হাতিশুর গাছের শিকড় এর রস করে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন। তাহলে অনেকটা সংক্রমণ কমে যায়।
  • আবার যদি কোন কারণে শরীরে আঘাত লেগে থাকে এবং আঘাতের ফলে শরীরের কোন স্থান ফোলে গেলে সেই স্থানের ফোলা কমাতে হাতিশুর গাছের পাতা ব্যবহার করতে পারেন। আপনার গাছের পাতাগুলো রস করে ফোলা জনিত স্থানে ব্যবহার করবেন।
  • তাছাড়াও আপনার যদি জ্বর ও কাশি হয়ে থাকে তাহলে এ গাছের শিকড়ের মূল পানির সাথে ফুটিয়ে সেই পানি খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
  • কাশি নিরাময় করতে হাতিশুর গাছের পাতার বেটে রস করে খেতে পারেন। এতে কাশি অনেকটা কমে যায়।
  • বিষাক্ত পোকামাকড় শরীরে কামড় দিলে যদি জ্বালাপোড়া করে তখন সেই জ্বালাপোড়ার স্থানে এই গাছের পাতার বেটে রস করে লাগাতে পারেন। তাহলে জ্বালা পোড়া সহ ব্যথাও পর্যন্ত দূর হয়ে যায়।
  • শরীরে ঠান্ডা লেগে যদি কোন স্থানে ফোলে যায় তাহলে সেই স্থানে হাতিশুর গাছের শিকড় রস করে লাগালে ব্যথা অনেকটা উপশম হয় এবং ফোলা ভাব কমে যায়।
  • বিভিন্ন কারণে চোখ টকটকে লাল হয়ে গেলে অথবা ধুলাবলি লাগার কারণে চোখ লাল হয়ে গেলে তখন হাতিশুর গাছের শিকড় ব্যবহার করতে পারেন।
  • তাছাড়া যদি ঠান্ডার কারণে সর্দি লেগে থাকে তাহলে হাতিশুর গাছের পাতা রস করে খেলে সর্দি অনেকটা কমানো যায়।
  • এছাড়াও জানা গেছে দাঁতের মাড়ি ফোলে গেলে এবং ব্যথা হলে হাতিশুর গাছের শিকড় এর মূল চাবালে ব্যাথা অনেকটা কমে যায় এবং দাঁতের মাড়ি ফোলা কমতে থাকে।
  • আবার যদি কোন ব্যক্তির ত্বকে ও মুখে ব্রণের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে ব্রণ দূর করতে হাতিশুর গাছের পাতা অথবা শিকড় রস করে ব্রণ জনিত স্থানে লাগাতে পারেন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে ব্রণ দূর করা সম্ভব।
  • ফ্যারিঞ্জাইটিস রোগে আপনারা এই গাছের পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন। উক্ত গাছের পাতার রস গরম পানির সাথে মিশিয়ে গড়গড়া করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
  • এছাড়াও যেসব ব্যক্তির একজিমা রোগ রয়েছে তারা এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে হাতিশুর গাছের পাতা ব্যবহার করতে পারেন। এই গাছের রস খেলে একজিমার রোগ দূর করা যায়।
আপনারা তাহলে হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা ও হাতিশুর গাছের পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারলেন। এখন আপনারা অবশ্যই উপকারিতা গুলো জেনে সঠিক নিয়ম মেনে উক্ত গাছের পাতাগুলো ব্যবহার করুন। তাহলে এই গাছের ঔষধি গুন সম্পূর্ণ বিভিন্ন উপকারিতা ভালোভাবে লাভ করতে পারবেন।

হাতিশুর গাছের মূলের উপকারিতা

হাতিশুর গাছের মূলের উপকারিতা বলতে এখানে হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা বলা হয়েছে। আমরা আগের অংশেই ভালোভাবেই হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জেনেছি। হাতিশুর গাছের মূল বেটে রস করে খেলে সর্দি-কাশি দূর হয়ে যায়। তাছাড়াও টাইফয়েড রোগে জ্বর হয়ে থাকলে এই গাছের মূল খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। 
হাতিশুর গাছের মূলের উপকারিতা
অনেকের বিভিন্ন কারণে শরীরে আঘাত লেগে থাকে, এ সময়ে হাতিশুর গাছের মূল বেটে রস করে আঘাতের স্থানে লাগাতে পারেন। তাহলে আঘাত জনিত স্থানে ব্যথা কমে যায়। এছাড়াও পোকামাকড়ের কামড়ে শরীর জ্বালাপোড়া করলে উক্ত স্থানে হাতিশুর গাছের মূল বেটে রস করে লাগালে জ্বালাপোড়া কমে যায়। তাছাড়াও আরো অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে যা আপনারা উপরের অংশে ভালোভাবে জেনে গেছেন।

হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়া

আপনারা যদি শারীরিক শক্তি অর্থাৎ শারীরিক যৌবন সক্ষমতা বাড়াতে চাইলে এই গাছের শিকড় খেতে পারেন। এজন্য আপনারা সকালে কিছু পরিমাণ হাতিশুর গাছের শিকড় ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে মধুর সাথে মিশিয়ে চিবিয়ে রস করে খেতে পারেন। আর এই গাছের শিকড় খাওয়ার আগে অবশ্যই এক গ্লাস পানি খেয়ে নেবেন। পানি খাওয়ার পর হাতিশুর গাছের শিকড় খাবেন। 
যদি আপনার ঘরে মধু না থেকে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে গাছের শিকড় ২ ইঞ্চি নিয়ে চিবিয়ে রস খাবেন। রস খাওয়ার পর ছাল ফেলে দিবেন। মনে রাখা ভালো এই গাছের শিকড় সকালে অবশ্যই খালি পেটে খেতে হবে। তাহলে আপনার যৌবন শক্তি বৃদ্ধি পাবে। যৌবন শক্তি বাড়াতে এই গাছের শিকড়ের মূল আপনারা প্রতিদিন নিয়ম মেনে সকালে খালি পেটে খেতে পারেন।

হাতিশুর গাছের অপকারিতা

আপনাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা হাতিশুর গাছের অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। তাদের জন্য আমরা এই পাঠে উক্ত গাছের অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনারা হয়তো জানেন সকল কিছুর উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা পাওয়া যায়। সঠিক নিয়ম না মেনে কোন কিছু গ্রহণ করলে তার অপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। তেমনি ভাবে আপনি যদি হাতিশুর গাছের পাতা বা শিকড় নিয়ম মেনে ব্যবহার না করেন তাহলে অপকারিতা পেতে পারেন। এই গাছের বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে। হাতিশুর গাছের শিকড় অথবা পাতা সকালে খালি পেটে খেতে হয়। 
আপনারা যদি এই গাছের পাতা সকালে ভরা পেটে খেয়ে থাকেন তাহলে অপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। বিশেষ করে আপনার বমি বমি ভাব হতে পারে। তবে মূলত এই গাছের তেমন অপকারিতা দেখা যায় না। কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে অনিয়ম করে খেলে অপকারিতা গুলো লক্ষ্য করা যায়। তবে অপকারিতা চেয়ে উপকারিতায় বেশি পাওয়া যায়। এ ধরনের গাছ সাধারণত পরিত্যক্ত স্থানে জন্মে থাকে। তাহলে বুঝতে পারলেন হাতিশুর গাছের তেমন অপকারিতা নেই বললেই চলে।

হাতিশুর গাছ সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

প্রশ্নঃহাতি সুরের গাছের শিকড় খেলে কি হয়?
উত্তরঃ হাতিশুর গাছের শিকড় খেলে দেহে ছত্রাক জনিত সংক্রমণ নিরাময় করা যায়। তাছাড়াও শরীরে আঘাত লাগলে আঘাতের ব্যথা নিরাময়ে এই গাছের শিকড় বেটে রস করে ব্যবহার করা যায়। জ্বর ও সর্দি কাশিতে এ গাছের পাতার রস ব্যবহার করা যায়।

প্রশ্নঃহাতি সুরের গাছ কি?
উত্তরঃ হাতিশুর গাছ সাধারণত একবর্ষজীবী আগাছা জাতীয় উদ্ভিদ যেটি রাস্তার ধরে আগাছায় পাওয়া যায়, পুরাতন দালানের মাঝে দেখতে পাওয়া যায়। মূলত এটি আগাছা জাতীয় এক প্রকার উদ্ভিদ।

প্রশ্নঃহাতির সুর গাছের মূল খেলে কি হয়?
উত্তরঃ হাতিশুর গাছের মূল খেলে শরীরের ফোলা ভাব কমানো যায়। শরীরের ফোলা ভাব কমাতে হাতিশুর গাছের মূল বেটে রস করে ব্যবহার করতে পারেন।

প্রশ্নঃ হাতিশুর গাছের শিকড় অথবা পাতা কখন খেতে হয়?
উত্তরঃ আপনারা হাতিশুর গাছের শিকড় অথবা পাতা সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। এতে করে অনেক ভালো উপকারিতা পাওয়া যায়। বিশেষ করে যৌবন শক্তি বৃদ্ধিতে ভালো উপকারিতা দিয়ে থাকে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় বন্ধুরা আশা করছি আপনারা এতক্ষণে হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে গেছেন। এছাড়াও হাতিশুর গাছের অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। যেগুলো জেনে আপনারা সঠিক নিয়মে হাতিশুর গাছের শিকড় খেলে বিভিন্ন ধরনের উপকার পাবেন। আর উপকারিতা গুলো জানতে পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url