সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় জেনে নিন

প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা নিশ্চয়ই মোটা হতে চান। এজন্যই সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় এ সম্পর্কে জানতে আজকের পোস্টটিতে এসেছেন। তবে আপনাদের চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই, আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় ও কাঁচা ছোলা খেলে কি মোটা হওয়া যায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়
পোস্টসূচিপত্রঃআপনারা যদি কাঁচা ছোলা খেলে কি মোটা হওয়া যায় ও সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

ভূমিকা

আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যাদের ওজন অনেক কম হয়ে থাকে। তারা নিজেদের ওজন বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের উপায় অবলম্বন করে থাকে, কিন্তু সহজে ওজন বাড়াতে পারে না। তবে তাদের জন্যই আমরা আজকের পোস্টে ওজন বাড়ানোর জন্য কিছু উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। তাছাড়াও সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় এ সম্পর্কেও বিস্তারিত তুলে ধরা হবে। কারণ সকালে খালি পেটে কিছু খাবার খাওয়ার মাধ্যমে অতি সহজে মোটা হওয়া যায়। 

মোটা হওয়ার জন্য আপনাদের কোন ধরনের ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ঘরোয়া পদ্ধতিতে মোটা হতে পারবেন। যাদের শরীরের ওজন কম এবং শরীর চিকন তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটা হতে যাচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যারা শরীরের ওজন বাড়াতে চান এবং মোটা হতে চান তাদের জন্য কিছু উপায় ও টিপস আজকের পোস্টটিতে তুলে ধরা হবে।

সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়

আপনারা সকলে খালি পেটে কিছু খাবার খাওয়ার মাধ্যমে অতি সহজেই ওজন বাড়াতে ও মোটা হতে পারবেন। যাদের শরীর পাতলা তারা সকালে কিছু খাবার নিয়মিত খেলে ওজন বাড়াতে পারবেন। মোটা হওয়ার জন্য কোন ধরনের ওষুধ বা ভিটামিন খাওয়ার প্রয়োজন নেই। আপনারা প্রাকৃতিক খাবার ও প্রাকৃতিক ভিটামিন জাতীয় খাবার গ্রহণের মাধ্যমে মোটা হতে পারবেন। 

তবে বিশেষ ক্ষেত্রে যেসব ব্যক্তিরা দ্রুত মোটা হতে চান তারা ভিটামিন খেতে পারেন। তবে আপনারা আজকের এই অংশে সকলে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তবে চলুন কথা না বাড়িয়ে সকালে খালি পেটে কি কি খাবার খেলে মোটা হওয়া যায় এ সম্পর্কে জেনে নেই।

দুধঃ সকালের নাস্তার সাথে আপনারা দুধ খেতে পারেন।দুধে থাকা সকল ধরনের পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন বি১২ যা আমাদের শরীরের হাড় মজবুত ও দাঁত গঠনের ভালো কাজ করে থাকে। তাছাড়া ও শরীরের ওজন বাড়াতে এবং শরীর মোটা করতে সহায়তা করে থাকে। আর আপনারা হয়তো জানেন ভিটামিন বি ১২ শরীরের রক্তশূন্যতা দূর করতে পারে। তাহলে আপনারা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুধ খেতে পারেন ওজন বাড়াতে।

খেজুরঃ সবচেয়ে পুষ্টিকর ফল হিসেবে খেজুর অন্যতম। খেজুরের প্রায় সকল ধরনের পুষ্টিকর উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। দুধের মত খেজুরেও ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম উপাদান রয়েছে। যার ফলে খেজুর খেলে শরীরে হাড় মজবুত থাকে। আর খেজুর ফাইবার ও আশ জাতীয় হওয়ায় এটি হজমে সহায়তা করে থাকে। 
যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত সকালে খালি পেটে দুই থেকে তিনটি খেজুর খেতে পারেন। আপনার যদি সকালের নাস্তার সাথে তিন থেকে চারটি খেজুর খান তাহলে আপনার ওজন বাড়ার পাশাপাশি মোটা হতে পারবেন। তাছাড়া এটি স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে থাকে এবং দেহে প্রয়োজনীয় হরমোন উৎপাদনে সাহায্য করে।

কলাঃ আপনি চাইলে প্রতিদিন সকালে একটি করে কলা খেতে পারেন। কলাতে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে, বিশেষ করে কলাতে ভিটামিন বি৬ রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। তাছাড়া কলা খাওয়ার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায়, হজমে সহায়তা করে থাকে। এছাড়াও কলা সকালে খালি পেটে খেলে ওজন বাড়ানো যায়। ওজন বাড়ানোর পাশাপাশি মোটা হওয়ার ক্ষেত্রে কলা খুবই ভালো কাজ করে থাকে। আপনারা চাইলে দুধের সাথে কলা খেতে পারেন।

ডিমঃ ডিম সাধারণত সকলেরই প্রতিদিন সকালে খাওয়া উচিত। কারণ ডিমের পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের খুবই উপকারী। ডিমে প্রায় সকল ধরনের ভিটামিন উপস্থিত রয়েছে। ডিম আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এবং চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে পারে। তাছাড়া ও ডিম ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। 

আপনারা সকালে বিভিন্ন খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ডিম খেতে পারেন।সকালে প্রতিদিন ডিম খেলে আপনারা ওজন বাড়াতে পারবেন এবং যারা বডি বিল্ডিং করেন তাদের ক্ষেত্রে বডি বাড়াতে ও মাংসপেশি বৃদ্ধিতে ভালো কাজ করে থাকে। এজন্য আপনারা মোটা হতে সকালে ডিম খেতে পারেন।

বাদামঃ বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট, প্রোটিন ও ক্যালোরি রয়েছে যা আমাদের দেহের ওজন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। এজন্য আপনারা নিয়মিত যদি সকালে বাদাম খান শরীর মোটা করতে পারবেন এবং ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন। বাদামে থাকা ক্যালোরি শরীরের মাংসপেশী বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। 

যত ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করবেন তত দ্রুত ওজন বাড়ানো যাবে। এজন্য আপনারা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কিছু পরিমাণ বাদাম খেতে পারেন। তবে আপনারা যেকোনো ধরনের বাদাম খেতে পারেন। যেমনঃ কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, চিনা বাদাম ইত্যাদি বাদাম গুলো খেতে পারেন।

কিসমিসঃ কিসমিস আপনারা ওজন বাড়ানোর জন্য কিছু পরিমাণ খেতে পারেন। কারণ কিসমিসে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে যা শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। আপনারা চাইলে বাদামের সাথে কিসমিস মিশিয়ে খেতে পারেন এতে করে ভালো উপকার পাওয়া যায়। যে কোন খাবারের সাথে কিসমিস মিশিয়ে খেলে তার গুনাগুন বৃদ্ধি পায়। এজন্য আপনারা দুধ অথবা খেজুরের সাথে কিসমিস মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেতে পারেন এতে করে ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি মোটা হতে পারবেন।

মধুঃ মোটা হওয়ার জন্য আপনারা চাইলে নিয়মিত মধু খেতে পারেন। মধুতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে তাছাড়াও শর্করা উপাদান বিদ্যমান থাকার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সঠিক রাখতে পারে এবং ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে। সকালে আপনারা দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন এতে করে দুধের পুষ্টিগুণ আরো বেড়ে যায়। যার ফলে আপনার ওজন বাড়াতে সহায়ক হয়। এজন্য প্রতিদিন সকালে দুধের সাথে দুই চা চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন, এছাড়াও সরাসরি মধু এক চামচ করে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারেন।

ছোলাঃ তবে জানা গেছে সকালে খালি পেটে ছোলা খেলে ওজন বাড়ানো সম্ভব। কারণ ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে। আমাদের শরীরে ওজন বাড়ানোর জন্য ক্যালরি চাহিদা পূরণ করতে হয় এবং বেশি ক্যালরি ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। এজন্য সকালে খালি পেটে ছোলা খেলে ওজন বাড়ানো সম্ভব। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা দিয়ে থাকে। এ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আজকের পোস্টে জানতে পারবো।

তাহলে প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা উপরে কিছু খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারলেন যেগুলো আপনারা সকালে খেলে মোটা হতে পারবেন এবং ওজন বাড়াতে পারবেন।উপরোক্ত খাবার গুলো আপনারা সকালের নাস্তার সাথে খেতে পারেন। তাহলে ভালোভাবেই বুঝতে পারলেন সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়।

কি খাবার খেলে মোটা হওয়া যায়

আপনার যদি মোটা হতে চান তাহলে অবশ্যই কিছু খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ওজন বাড়াতে পারবেন এবং মোটা হতে পারবেন। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় কিছু খাবার গ্রহণ করার মাধ্যমে ওজন বাড়ানো সম্ভব। আপনারা হয়তো ইতিমধ্যে সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় এ সম্পর্কে জেনে এসেছেন। তবে এখন আপনাদের অবশ্যই জানা উচিত কোন কোন খাবার খেলে মোটা হওয়া যায়। আর সে সম্পর্কে আজকের এই অংশে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করব। তবে চলুন জেনে নেই কি কি খাবার খেলে মোটা হওয়া যায়।

ডালঃ আমাদের ওজন বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো প্রোটিন ও আমিষ। আর এই ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও আমিষ রয়েছে যা আমাদের শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। আপনারা হয়তো অনেকে মনে করেন ডালে তেমন প্রোটিন পাওয়া যায় না, তবে এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। মুরগি ও মাছের মত ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায়।
তাহলে বুঝতে পারছেন ডাল খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের ওজন বাড়াতে পারবেন। ডালে আরও রয়েছে রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও আয়রন সহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যা শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই আপনারা প্রতিদিন দুপুরের খাবারে ডাল অবশ্যই রাখতে পারেন। এটি আপনার মোটা হতে অনেকটা সাহায্য করবে।

টক দইঃ টক দই যেহেতু দুধ দিয়ে বানানো হয়, তাহলে টক দইয়ে দুধের সমতুল্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তাহলে আপনার প্রতিদিন দুপুরের খাবারে পর টক দই খেতে পারেন। এতে শরীরের ভালো উপকার পাওয়া যায়। এই টক দই খাওয়ার মাধ্যমে দেহের ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন। তবে বলে রাখা ভালো মিষ্টি দই ওজন বাড়ানোর জন্য খাওয়া উচিত নয়। 

কারণ মিষ্টি দই এ প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। এর কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি হুমকি স্বরূপ হতে পারে। আপনার মিষ্টি দই খেতে পারবেন তবে পরিমাণ মাত্রায় খাওয়া উচিত। আর ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে টক দই খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

মুরগির মাংসঃ আপনারা চাইলে ডালের পাশাপাশি মুরগির মাংস খেতে পারেন। কারণ মুরগির মাংসের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও প্রোটিন যা ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। তবে মুরগির মাংস বেশি খাওয়া উচিত নয় কারণ এতে রয়েছে অস্বাস্থ্যকর চর্বি যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এজন্য আপনারা দুপুরের খাবারে কমপক্ষে এক থেকে দুই টুকরো করে মুরগির মাংস খেতে পারেন। 
অধিক পরিমাণ মাংস খেলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমে যেতে পারে। এজন্য আমিষ পেতে সঠিক পরিমাণ মুরগির মাংস ও ডাল খাবেন। ডাল বেশি খেলেও সমস্যা নেই, কারণ ডালে তেমন কোন ক্ষতিকর চর্বি নেই। এজন্য ডালের পাশাপাশি মুরগির মাংস সঠিক মাত্রায় খাবেন।

শাকসবজি ও ফলমূলঃ মোটা হতে চাইলে অবশ্যই সঠিক পুষ্টিকর ফলমূল ও শাকসবজি খেতে হবে। এজন্য আপনারা আম , জাম , কাঁঠাল , লিচু, পেপে, কলা , মিষ্টি কুমড়া , পালং শাক , মিষ্টি আলু ইত্যাদি খেতে পারেন। তবে মোটা হতে চাইলে বিশেষ করে আলুটি বেশি করে খেতে পারেন। কিন্তু অতিরিক্ত আলু খাওয়ার প্রয়োজন নেই। সম্ভবত চেষ্টা করবেন অন্যান্য তরকারির সাথে আলু বেশি খাওয়া। তাহলে আশা করা যায় আপনি এক মাসের মধ্যেই শরীরের ওজন বাড়াতে পারবেন এবং শরীর মোটা তাজা করতে পারবেন।

ভাতঃ প্রতিটি বেলায় অর্থাৎ সকাল , দুপুর , রাত সব বেলাতেই খাবারে ভাত রাখতে হবে। কারণ ভাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা যেটি আপনার ওজন বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। তাছাড়া ভাতের মাড়ও খেতে পারেন। ভাতে থাকা ক্যালরি আপনার শরীরে শক্তি যোগান দেবে এবং শরীর মোটাতাজা হতে সাহায্য করবে। এজন্য নিয়মিত সকল সময়ে ভাত খাওয়ার চেষ্টা করুন। আর যারা রুটি খান তারা অবশ্যই কম পরিমাণে রুটি খাবেন। কারণ রুটি খেলে ওজন কমানো সম্ভব কিন্তু বাড়ানো সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে ভাত খাবেন বেশি করে তাহলে ওজন বাড়াতে পারবেন।

দুধ ও মধুঃ প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে দুধ ও মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। এটি আপনার শরীরে শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করবে এবং দেহ মোটাতাজা করতে ভালো কাজ করে থাকে। তাই আপনারা প্রতিদিন নিয়মিত ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খাবেন তাহলেই এক থেকে দুই মাসের মধ্যে শরীর মোটাতাজা হয়ে যাবে।

ঘি ও মাখনঃ শরীরে পরিমাণমতো পুষ্টি উপাদান যোগান দিতে ঘি ও মাখন খুবই কার্যকরী। ঘি ও মাখনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি যা দেহের পুষ্টি উপাদান ঘাটতি পূরণ করে এবং শরীরের শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। আর তাছাড়া ওজন বাড়াতে ঘি এর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা যদি প্রতিদিন সকালে গরম ভাতের সাথে ঘি মিশিয়ে খান তাহলে অনায়াসে ওজন বাড়াতে পারবেন। এছাড়াও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গরম ভাতের সাথে ঘি মিশিয়ে খেতে পারেন।

ফলের জুসঃ আপনাদের মধ্যে হয়তো অনেকেই জানেন না ফলের জুস ওজন বাড়াতে পারে। ফলের রসে সাধারণত অধিক পরিমাণে শর্করা উপাদান থাকে যার ফলে দেহে ক্যালোরি উৎপন্ন হয়। অসাধারণ তো ফলের রস আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। আমরা বিভিন্ন অসুখ হয়ে থাকলে বেশিরভাগ সময় ফলের রস খেয়ে থাকি। তাহলে বুঝতে পারছেন ফলের রস কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা মোটা হতে চাইলে নিয়মিত একগ্লাস করে যে কোন ফলের রস খেতে পারেন।

শুকনো ফলঃ আপনারা চাইলে শুকনো ফল খাওয়ার মাধ্যমে দেহের ওজন দ্রুত বাড়াতে পারবেন। শুকনো ফলের মধ্যে খেজুর , নারকেল , আখরোট ,খোরমা ,কিশমিশ ও কাজুবাদাম ইত্যাদি খেতে পারেন। এগুলো খেলে আপনার শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

আশা করছি প্রিয় দর্শকবৃন্দ আপনার এতক্ষণে কি খাবার খেলে মোটা হওয়া যায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে গেছেন। আমরা উপরে কিছু দৈনন্দিন জীবনের খাবারের তালিকা প্রকাশ করেছি যেগুলো খেলে আপনারা দ্রুত মোটা হতে পারবেন আর অতি সহজেই শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন। উপরোক্ত খাবারগুলো নিয়মিত খেলে ওজন বাড়ানো সম্ভব। তাই নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সঠিক মাত্রায় খাবার গুলো গ্রহণ করুন।

কোন ফল খেলে মোটা হওয়া যায়

আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা ফল খেয়ে মোটা হতে চান। তাদের কথা ভেবে আমরা আজকের এই পাঠে কোন ফল খেলে মোটা হওয়া যায় এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। এমন অনেক ফল রয়েছে যেগুলো খেলে শরীর মোটা তাজা হয়ে ওঠে। সেই ফলগুলো আপনারা যদি নিয়মিত খান বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়ার সাথে সাথে দেহের ওজন বাড়াতে পারবেন। 
কোন ফল খেলে মোটা হওয়া যায়
তবে আপনাদের শুধু সেই ফলগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে এবং নিয়মিত ফলগুলো গ্রহণ করতে হবে। তবে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক কোন ফল খেলে মানুষ তাড়াতাড়ি মোটা হতে পারবে।
  • আঙুর
  • আম
  • বাদাম
  • মিষ্টি আলু
  • কাঁঠাল
  • শশা
  • নাশপাতি
  • লিচু
  • কাঁচা কলা 
  • কলা
  • পাকা পেঁপে
  • খেজুর 
  • মিষ্টি কুমড়া
  • কিসমিস
  • কাজুবাদাম
  • আপেল
উপরোক্ত ফলগুলো আপনারা নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে অনায়াসেই শরীর মোটা তাজা করতে পারবেন। তাছাড়া ও ফলগুলো খাওয়ার পাশাপাশি প্রোটিন ও আমিষ জাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

মোটা হওয়ার প্রাকৃতিক ঔষধ

মোটা হওয়ার জন্য আপনারা কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে পারেন। মোটা হওয়ার প্রাকৃতিক ওষুধ বলতে ঘরোয়া উপায়ে মোটা হওয়াকে বোঝায়। আপনারা চাইলে ঘরে বসেই কিছু উপায় অবলম্বন করে অতি সহজে ওজন বাড়াতে পারবেন। নিচে মোটা হওয়ার উপায় গুলো আলোচনা করা হলোঃ
  • মোটা হওয়ার জন্য আপনারা চাইলে প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে। তাছাড়াও ফ্যাট জাতীয় ফলমূল ও শাকসবজি খেলে দ্রুত ওজন মান সম্ভব। এজন্য আপনারা বাজার থেকে অবশ্যই ফ্যাট জাতীয় ফল-মুল কিনে খাবেন।
  • এছাড়াও আপনাকে মোটা হওয়ার জন্য বেশি বেশি করে খাবার খেতে হবে। যখন আপনার ক্ষুধা লাগবে তখনই আপনি খাবার খাবেন। তবে মনে রাখবেন একসাথে বেশি করে খাবেন না তাহলে পেটে সমস্যা হতে পারে। যখন আপনার খেতে মন চাইবে তখনই বারবার করে কিছু সময় পর পর খাবেন। মূলত আপনার খাবার খাওয়ার চাহিদা প্রতিদিন বাড়িয়ে দিতে হবে।
  • শরীরের ওজন বাড়ানোর জন্য এবং মোটা হওয়ার জন্য কিসমিস ও বাদাম খুবই উপকারী। প্রতিদিন সকালে যদি আপনি ভেজানো কিসমিস ও বাদাম খান তাহলে অতি সহজেই দেহের ওজন বাড়ানোর সম্ভব হয়। এজন্য প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস ও বাদাম পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন এবং সকালে উঠে খালি পেটে খেয়ে নিবেন।
  • দ্রুত মোটা হওয়ার জন্য অবশ্যই শর্করা জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। তাই আপনারা যথাসম্ভব ভাত বেশি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। ভাতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা এবং ক্যালরি রয়েছে এটি ওজন বাড়াতে উপযোগী। এজন্য যখন আপনার ক্ষুধা লাগবে তখনই বেশি করে ভাত খাবেন।
  • তাছাড়াও প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই প্রোটিন ও আমিষ জাতীয় খাবার রাখতে হবে। এজন্য আপনারা প্রতিদিন অল্প পরিমাণ করে মাছ মাংস খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে করে আপনার দেহে আমিষের চাহিদা পূরণ হবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে। ফলে আপনার শরীর দ্রুত মোটা করতে পারবেন।
এছাড়াও আপনারা মোটা হওয়ার জন্য আলুর তরকারি বেশি করে খেতে পারেন। আলু খেলে দ্রুত মোটা হওয়া যায়। তার পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে বডি বানাতে পারেন। এতে করে আপনার মাংস বেশি বৃদ্ধি পাবে এবং শরীর মোটা হতে থাকবে।

কাঁচা ছোলা খেলে কি মোটা হওয়া যায়

আপনারা অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন কাঁচা ছোলা খেলে কি মোটা হওয়া যায়। আপনাদের এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আজকের এই অংশে উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। সাধারণত কাঁচা ছোলা খেলে মোটা হওয়া যায় না, কারণ কাঁচা ছোলাতে ফ্যাট ও ক্যালোরি খুব কম পরিমাণে রয়েছে। যার ফলে এটি সরাসরি খেলে ওজন বাড়ানো সম্ভব নয় বা মোটা হওয়া যায় না। 
কাঁচা ছোলাতে রয়েছে ভিটামিন, প্রোটিন ও ফাইবার জাতীয় উপাদান যেটি আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। উচ্চতা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে এই কাঁচা ছোলা। তাছাড়াও কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সাহায্য করতে পারে। আরো বিভিন্ন ধরনের উপকার করে কাঁচা ছোলা। তাহলে এক কথায় বলা যায়, কাঁচা ছোলা সরাসরি খেলে মোটা হওয়া যায় না বরং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তবে ছোলা রান্না করে অন্যান্য খাবারের সাথে খেলে ওজন বাড়ানো সম্ভব।

খেজুর খেলে কি মোটা হওয়া যায়

খেজুর অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি ফল। যেটি খাওয়া হলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ হয় এবং শরীরের শক্তি বেড়ে যায়। খেজুর খেলে কি মোটা হওয়া যায় এ সম্পর্কে অনেকেই ভুল ধারণা নিয়ে থাকেন। তাদের জন্য বলব খেজুর খেলে মোটা হওয়া যায় না। খেজুরের কোন ধরনের ফ্যাট উপস্থিত নেই। এটি খেলে শরীরের ওজন বাড়ানো সম্ভব নয় বরং ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব। তাছাড়াও খেজুর খাওয়ার ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়। 
খেজুর খেলে কি মোটা হওয়া যায়
বিশেষ করে খেজুরের ক্যালোরি চাহিদা বেশি থাকে যার ফলে শরীর ক্লান্তি কম অনুভব করে। এজন্য প্রতিদিন সকালে খেজুর খেলে সারাদিনে শরীরের শক্তির চাহিদা মেটানো যায়। তবে আপনারা দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করে ওজন বাড়াতে পারেন। তাহলে বুঝতে পারছেন সরাসরি খেজুর খেলে মোটা হওয়া যায় না। কিন্তু আপনারা এক গ্লাস গরম দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে প্রতিদিন রাতে খেলে শরীরের ওজন বাড়ানোর সাথে দেহ মোটাতাজা করতে পারবেন।

মোটা হওয়ার ফর্মুলা

মোটা হওয়ার ফর্মুলা হিসেবে আপনাদের অবশ্যই প্রথমে ক্যালরিযুক্ত ও আমিষ যুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। এজন্য আপনারা প্রতিদিন ডাল ও মাংস জাতীয় খাবার খাদ্য তালিকায় রাখবেন। তাছাড়া ও খাবার তালিকায় অবশ্যই কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার রাখার চেষ্টা করবেন। আর প্রতিদিন নিয়মিত সঠিকভাবে ব্যায়াম করবেন। ব্যায়াম করার মাধ্যমে দেহের গঠন ঠিক রাখা যায় এবং মাসেল বৃদ্ধি করা যায়। 
প্রতিদিন রাতে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে। ঘুমানোর আগে আপনারা দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন, এটি মোটা হতে ভালো কাজ করে থাকে। আর প্রতিদিন সঠিক পরিমাণ প্রোটিন জাতীয় খাবার খাবেন। এভাবে দৈনিক খাবার গ্রহণ করলে আপনি দ্রুত মোটা হতে পারবেন। মোটা হওয়ার ফর্মুলা হিসাবে উপরোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রেখে চলতে হবে।

মোটা হওয়া সম্পর্কিত সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

প্রশ্নঃসকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা?
উত্তরঃ সকালে খালি পেটে কিছু খাবার খাওয়ার মাধ্যমে মোটা হওয়া যায়। এজন্য আপনারা সকলে খালি পেটে দুধ, ডিম , কলা ও খেজুর ইত্যাদি খেতে পারেন।

প্রশ্নঃমোটা হতে গেলে কি কি খাবার খেতে হবে?
উত্তরঃ মোটা হতে গেলে বেশি বেশি, আমিষ ও প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে শাকসবজি ও মাংস জাতীয় খাবার খেতে হবে। তাছাড়া ফলমূল খেতে পারেন।

প্রশ্নঃকখন ডিম খেলে ওজন বাড়বে?
উত্তরঃ দিনের যেকোনো সময়ে দুই থেকে তিনটি ডিম খেলে দ্রুত ওজন বাড়ানো সম্ভব। আপনার যদি প্রতিদিন নিয়মিত দুই থেকে তিনটি ডিম খেতে শুরু করেন তাহলে দুই মাসের মধ্যেই শরীরের ওজন বেড়ে যাবে।

প্রশ্নঃকী খাবার খেলে ওজন বাড়ে?
উত্তরঃ ওজন বাড়ার জন্য খাবার তালিকায় অবশ্যই উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার রাখতে হবে। এজন্য খাদ্য তালিকায় কাঠবাদাম , কাজুবাদাম , আখরোট , কিসমিস , মুরগির মাংস , আলু ইত্যাদি রাখতে পারেন। আর এই খাদ্যগুলো অবশ্যই নিয়মিত খেতে হবে।

প্রশ্নঃকি কি খাবার খেলে মানুষ মোটা হয়?
উত্তরঃ মোটা হওয়ার জন্য শাকসবজি ও ফলমূল বেশি খেতে হবে। তাছাড়াও আলু , ডিম , মাংস , বাদাম , পিনাট বাটার , টক দই ইত্যাদি খেতে পারেন।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ভালোভাবে জেনে গেছেন। এখন শুধু আপনাদের খাদ্য তালিকা গুলো ভালোভাবে জেনে নিয়মিত গ্রহণ করতে হবে। তাহলে আপনারা সঠিকভাবে শরীরের ওজন বাড়াতে পারবেন এবং মোটা হতে পারবেন। মোটা হওয়ার জন্য তেমন কোন কৃত্রিমভাবে ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই। কৃত্রিম ভাবে তৈরি ওষুধ না খেয়েও খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ওজন বাড়ানো যায়। আর ওষুধ খেলে ওজন বাড়ার পাশাপাশি শরীরে ক্ষতি হতে পারে। এজন্য আপনারা অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করুন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

বিজ্ঞাপন