Telegram group

ordinarybdgnews

মাছের খাদ্য তৈরির ফর্মুলা - রুই মাছের খাদ্য তালিকা জানুন

প্রিয় কৃষক ভাইয়েরা আপনার অনেকেই মাছ চাষ করতে চান ,তবে অনেকেই আছেন যারা মাছের খাদ্য তৈরির ফর্মুলা সম্পর্কে জানেন না। তাদের জন্য আজকের পোস্টটিতে আমরা মাছের খাদ্য তৈরির ফর্মুলা ও রুই মাছের খাদ্য তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
মাছের খাদ্য তৈরির ফর্মুলা - রুই মাছের খাদ্য তালিকা
পোস্টসূচিপত্রঃআপনারা যদি মাছের খাদ্য তৈরির উপকরণ ও মাছের খাবার দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

ভূমিকা

আমাদের মধ্যে অনেক কৃষক ভাইরা রয়েছে যারা মাছ চাষ করতে চায়। তবে মাছ চাষ করে লাভবান হতে চাইলে অবশ্যই মাছ স্বাস্থ্যসম্মত ওজন হতে হবে। আর মাছ বেড়ে ওঠা ও ওজন বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই মাছকে পুষ্টিকর সুষম খাবার দিতে হবে। আপনারা যদি মাছ চাষ করে লাভজনক ব্যবসা গড়ে তুলতে চান তাহলে অবশ্যই মাছকে সঠিক খাবার দিতে হবে। এজন্য আপনাদের জানতে হবে মাছের খাদ্য তৈরির ফর্মুলা ও মাছের খাদ্য তৈরির উপকরণসমূহ। 
তবে চিন্তিত হওয়ার কোন কারণ নেই , আজকের এই পোস্টটিতে আমরা মাছের খাদ্য তৈরি উপকরণ , কম খরচে মাছের খাবার তৈরি , মাছের খাবার দেয়ার নিয়ম , মাছের প্রাকৃতিক খাবার তৈরীর পদ্ধতি সমূহ ইত্যাদি বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই মাছের খাবার সম্পর্কিত বিস্তারিত জানতে পোস্টটি পড়ুন।

মাছের খাদ্য তৈরির ফর্মুলা 

মাছকে সঠিক খাদ্য ও সুষম খাদ্য দিতে চাইলে অবশ্যই মাছের খাদ্য তৈরির ফর্মুলা সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। যার ফলে আপনারা সঠিক পদ্ধতিতে মাছের খাদ্য তৈরি করতে পারবেন এবং সেই খাদ্য মাছকে দেওয়ায় মাছ দ্রুত বেড়ে উঠবে। এর ফলে আপনারা মাছের ব্যবসা করে আর্থিকভাবে সফল হতে পারবেন। সাধারণত পুকুরে মাছের প্রাকৃতিক খাবারের স্বল্পতা দেখা দিলে তখন কৃত্রিমভাবে সম্পূরক খাবার দিতে হয়। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এবার জেনে নেই মাছের খাদ্য তৈরির ফর্মুলা কি।
  • সাধারণত পুকুরে মাছ ধরার পর মাছের মোট ওজনের ৪-৫ ভাগ হারে সুষম সম্পূরক খাদ্য দিতে হবে।
  • প্রথমে আপনাকে পুকুরের মাছের মোট ওজনের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।মাছ পুকুরে ছাড়ার পর মাসে একবার জাল ফেলে মাছের গড় ওজন নির্ধারণ করে সেই অনুযায়ী খাদ্য তৈরি করতে হবে।
  • এরপর আপনাকে পুকুরে মাছের গড় ওজন অনুযায়ী আনুমানিক সম্পূরক খাদ্য প্রদান করতে হবে।
  • বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে সাধারণত প্রতি ২০ কেজি মাছের জন্য এক কেজি পরিমাণ সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ করতে হয়।
  • আপনারা মাছের প্রাথমিক খাদ্য হিসেবে সরিষার খৈল শতকরা ৪০ ভাগ , গমের ভুসি এবং চালের কুড়া শতকরা ৬০ ভাগ অনুপাতে নিয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন। এরপর খাদ্য দুটি মিশ্রিত করে পুকুরের বিভিন্ন স্থানে বা নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানে প্রয়োগ করবেন।
  • তাছাড়াও আপনারা সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন গমের ভুসি বা চাউলের গুড়া শুকনো খাদ্য হিসেবে পুকুরে প্রয়োগ করতে পারেন। এই খাদ্যগুলো মাছ পুকুরের উপর ভেসে ভেসে খেয়ে থাকে।
  • এবার আপনারা মাছের সম্পূরক খাদ্য ও ফর্মুলা হিসেবে চালের কুঁড়া ৫২ পারসেন্ট,চিটাগুড় শতকরা ৬ ভাগ,ফিশমিল ১১% ,সরিষার খৈল ৩০.৫০% এবং খনিজ লবণ ও ভিটামিন একত্রে ০.৫% নিতে হবে। সকল উপাদান গুলো আপনাকে গুড়ো করে একসাথে মিশাতে হবে। তারপর মিশানোর পর উপাদান গুলো দিয়ে লাড্ডুর মত গোল আকারের দলা তৈরি করতে হবে।
  • এই খাদ্যগুলো ভালোভাবে শুকানোর পর পুকুরে নির্দিষ্ট সময়ে এবং নির্দিষ্ট স্থানে প্রয়োগ করতে হয়। তাই সঠিক সময়ে সম্পূরক খাদ্যগুলো পুকুরের নিচে নির্দিষ্ট গভীরতায় প্রদান করবেন।
সাধারণত সম্পূরক খাদ্য পুকুরে দেওয়ার মাধ্যমে মাছের খাবারের অভাব দূর করা যায়। তবে আপনারা যদি ভাসমান শুকনো খাবার প্রয়োগ করেন তাহলে খাবারের অপচয় কম হয় অর্থাৎ খরচ অনেকটা কমে যায়। আশা করছি আপনারা মাছের খাদ্য তৈরির বিশেষ ফর্মুলা জানতে পারলেন। এভাবে খাদ্য দিলে মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে।

কম খরচে মাছের খাবার তৈরি

আপনার অনেকেই কম খরচে মাছের খাবার তৈরি করতে চান। তাদের জন্যই আমরা আজকের এই পাঠে কম খরচে মাছের খাবার তৈরি করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। সাধারণত মাছকে ভাসমান খাবার দিলে খরচ কম হয়। এক্ষেত্রে আপনাকে শুকনো জাতীয় খাদ্য তৈরি করতে হবে এবং সেগুলো পুকুরে প্রয়োগ করতে হবে। 
এতে করে শুকনো খাদ্যগুলো পুকুরে ভাসমান অবস্থায় থাকবে এবং মাছ উপরে উঠে সেই খাবারগুলো খেতে থাকবে। ফলে খাবারের অপচয় কমে যায় এবং কম খরচ হয় খাদ্য তৈরিতে। এজন্য আপনাদের কম খরচে মাছের খাবার তৈরি করার জন্য শুকনো জাতীয় খাবার নির্বাচন করতে হবে। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক কম খরচে মাছের খাবার তৈরির উপকরণ ও নিয়মঃ
  • কম খরচে খাদ্য তৈরীর জন্য গমের ভুসি ও চালের চালের কুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন।
  • প্রথম মাসে প্রতি শতাংশ পুকুরে ৫০ গ্রাম খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে।
  • দ্বিতীয় মাসে একইভাবে ১০০ গ্রাম খাদ্য পুকুরে প্রদান করতে হবে।
  • আবার তৃতীয় মাসে প্রয়োগ করতে হবে ১৯০ গ্রাম।
  • চতুর্থ মাসে পুকুরে খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে ২২০ গ্রাম।
  • পঞ্চম তম মাসে গিয়ে পুকুরে খাবার দিতে হবে ২৭০ গ্রাম।
  • আর ষষ্ঠ মাসে দিতে পারেন ৩০০ গ্রাম।
আপনার হয়তো উপরে কম খরচে গমের ভুসি বা চালের কুড়া ব্যবহার করে কোন মাসে কত গ্রাম খাবার দিতে হয় সেই নিয়ম জানতে পারলেন। এবার চলুন আমরা মাছের স্বল্প খরচে খাবার তালিকা দেখে নেই।

উপকরণ/ খাদ্য

  শতকরা/ পরিমাণ

ফিশমিল

২২ %

সোয়বিন চূর্ণ

১০%

ভুট্টাচূর্ণ

৫%

গমের ভুসি

১২%

অটোকুড়া

৩০%

চিটাগুড়

৫%

ভিটামিন প্রিমিক্স

১ গ্রাম

খৈল

২০%

তাছাড়াও আপনারা কম খরচে মাছের খাবার তৈরি করার জন্য খৈল , গমের ভুসি , চালের কুড়া, ধান গুড়া ,শুটকির গুড়া ও খনিজ লবণ ইত্যাদি উপকরণ মাছের খাদ্য তৈরিতে ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও বর্তমানে বাজারে মাছের বিভিন্ন সম্পূরক খাদ্য হিসেবে ফিডস পাওয়া যাচ্ছে যেগুলো আপনারা  মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

মাছের খাবার দেওয়ার নিয়ম

আপনাদের মাছের খাবার তৈরি করা হয়ে গেলে অবশ্যই সঠিক নিয়মে মাছের খাবার দিতে হবে। আর এজন্য আপনাদের মাছের খাবার দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। মাছকে সঠিক নিয়মে খাবার দেওয়ার মাধ্যমে দ্রুত বৃদ্ধি করা যায়। তাই আপনাদের মাছের খাদ্য তৈরি করা হয়ে গেলে সঠিকভাবে খাবারগুলো পুকুরে ছিটাতে হবে। আর এজন্যই আপনাদের কিছু নিয়ম-নীতি মেনে মাছের খাবার পুকুরে দিতে হবে। এবার আমরা জেনে আসি মাছের খাবার দেওয়ার উপায় ও নিয়মঃ
  • প্রথমেই পুকুরের মাছ ধরার পর প্রতি মাসে মাছের গড় ওজন করতে হবে। তাই আপনারা প্রতি মাসে পুকুরে জাল ফেলে মাছ টেনে নিয়ে গড় ওজন করতে পারেন।
  • এভাবে মাছের গড় ওজন নির্ণয় করে মাছের গড় বৃদ্ধির হার নির্ণয় করে সে অনুযায়ী খাবার তালিকা তৈরি করে খাবার প্রদান করতে হবে।
  • আপনি পুকুরে কতগুলো মাছের পোনা ছেড়েছেন এবং কতগুলো মাছের পোনা বেঁচে আছে তার উপর নির্ভর করে খাদ্য প্রদান করতে হবে।
  • আপনাদের অবশ্যই পুকুরের পানির উপর নজরে রাখতে হবে। কারণ তাপমাত্রা কম বেশি হওয়ার কারণে খাদ্য তালিকা পরিবর্তন করতে হয়। সাধারণত ২৮ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা হলো মাছ চাষের উপযুক্ত পরিবেশ।
  • তাছাড়াও আপনাদের পুকুরের পানির স্বচ্ছতা লক্ষ্য করতে হবে। পুকুরে পানি স্বচ্ছতা কমে গেলে অক্সিজেন অভাব দেখা দেয়। এজন্য পুকুরের পানি পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করতে হবে। পুকুরের পানি সবুজ হয়ে গেলে অক্সিজেনের অভাব দেখা দিতে পারে ফলে মাছ খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না ঠিকমতো। তাই প্রতিদিন পুকুরের পানি পরীক্ষা করে দেখবেন।
  • আর আপনারা প্রতিদিন পুকুরের পানির পিএইচ মান ঠিক রাখতে পানিতে চুন প্রয়োগ করতে পারেন। তবে অবশ্যই মাছের জন্য পানির সঠিক ph মাত্রা ঠিক রাখার অবশ্যক।
  • মাছের খাদ্য পুকুরে দেওয়ার সময় অবশ্য নির্দিষ্ট স্থানে প্রয়োগ করতে হবে বা দিতে হবে। আপনারা পুকুরের নির্দিষ্ট চার থেকে পাঁচটি স্থানে মাছের খাদ্য দিবেন। আর খেয়াল রাখবেন মাছের খাদ্য যেন পুকুরের গভীরে যায়, সেজন্য নির্দিষ্ট গভীরতায় মাছের খাদ্য দিতে হবে।
  • পুকুরের যেসব স্থানে মাছের সংখ্যা বেশি থাকে সেসব স্থানে বেশি করে খাদ্য প্রয়োগ করবেন।
  • আর পুকুরে যদি খাদ্য দেওয়ার পর ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে খাবার মাছ খেয়ে ফেলে তাহলে বুঝবেন খাবার দেওয়ার পরিমাণ সঠিক রয়েছে।
  • তাছাড়াও ভাসমান খাদ্য হিসেবে শুকনো খাবার প্রদান করতে পারেন যেগুলো আমরা উপরের অংশে গ্রুপে সরকার আলোচনা করেছি।
আশা করছি আপনারা মাছের খাবার দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে গেলেন। আর যদি ভালোমতো বুঝতে না পারেন তাহলে অবশ্যই মৎস্য অধিদপ্তরে যোগাযোগ করুন। মৎস্য অধিদপ্তর আপনার পুকুর পরিদর্শন করে খাবার দেওয়ার নিয়ম বলে দেবে। তবে আমি উপরে প্রাথমিকভাবে মাছের খাবার দেয়ার নিয়ম তুলে ধরেছি যেগুলো আপনারা মেনে চলবেন।

রুই মাছের খাদ্য তালিকা

রুই অত্যন্ত সুস্বাদু মাছ। তাই বর্তমানে এই মাছের চাহিদা অধিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে কৃষকরা প্রায় রুই মাছ বেশি চাষ করে থাকে। তবে শুধু চাষ করলে হবে না রুই মাছ দ্রুত বৃদ্ধি করতে রুই মাছের খাদ্য তালিকা সম্পর্কে জানতে হবে। রুই মাছের খাদ্য তৈরিতে বিশেষ কোনো উপকরণের প্রয়োজন হয় না। সাধারণভাবে মাছের খাদ্য তৈরির জন্য যে উপকরণ ব্যবহার করা হয় সেগুলোই ব্যবহার করতে পারেন। 
কারণ রুই মাছ সাধারণত পুকুরের নিচে আগাছা গাছপালা , ঘাস ইত্যাদি খেয়ে থাকে। এজন্য এদের বেশি খাবার দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। 
তবে তাদের সম্পূরক খাদ্য উপকরণ হিসাবে ফিশমিল, গমের ভুসি , চালের কুড়া , খনিজ লবণ , সরিষা খৈল ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া বাজারে বর্তমানে মাছের খাদ্য জন্য বিভিন্ন ধরনের ফিড পাওয়া যায়। এগুলো আপনারা বাজারে থেকে কিনে মাছের খাদ্য জন্য দিতে পারেন। মাছের খাদ্য আপনারা ঘরে বসেই তৈরি করতে পারবেন আবার মৎস্য অধিদপ্তর থেকে পরামর্শ নিয়ে খাবার তৈরি করতে পারবেন। তাছাড়াও বাজার থেকে মাছের খাবার কিনে ব্যবহার করতে পারবেন।

গোবর দিয়ে মাছের খাদ্য তৈরি

মাছের খাদ্য তৈরিতে আপনারা চাইলে গোবর দিয়ে তৈরি করতে পারেন। গোবরের সাথে বিভিন্ন উপকরণ মিশিয়ে মাছের খাদ্য তৈরি করা যায়। এতে খাদ্যের পুষ্টিগুণ বহু গুনে বেড়ে যায়। এর ফলে মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং খাবারের চাহিদা পূরণ হয়। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এবার গোবর দিয়ে মাছের খাদ্য তৈরি করার উপায় জেনে নেই। 

তবে আপনারা চাইলে শুকনা গোবর সরাসরি পুকুরে প্রয়োগ করতে পারেন। এক বিঘা জমির ক্ষেত্রে প্রতিবছর পুকুরে ১ হাজার কেজি শুকনা গোবর প্রয়োগ করতে পারেন। তবে আপনার পুকুরে যদি খৈল দেয়া থাকে তাহলে শুধুমাত্র ৫০০ কেজি গোবর প্রয়োগ করতে হবে। গোবরে থাকা অপাচ্য বিভিন্ন খাদ্য অংশ মাছ খেয়ে থাকে। তবে মনে রাখা উচিত কখনোই সরাসরি কাঁচা গোবর ব্যবহার করা যাবে না। 
কাঁচা গোবর পুকুরে ব্যবহার করলে মাছ মারা যেতে পারে। কারণ কাঁচা গোবরে রয়েছে মিথেন গ্যাস এটি মাছের ক্ষতি করতে পারে এবং পুকুরের পানিতে গ্যাসের সৃষ্টি করতে পারে। তাই আপনারা যত সম্ভব শুকনা গোবর অথবা গোবর থেকে গ্যাস দূর করে সরাসরি ব্যবহার করতে পারেন। গোবরে গ্যাস দূর করার জন্য আপনারা গাছের নিচে গোবর দুই থেকে তিন সপ্তাহ রেখে দিতে পারেন। 
আরো পড়ুনঃ বয়লার মুরগির খাবার তালিকা
এতে করে গোবর থেকে মিথেন গ্যাস উরে যায় এবং গোবর গ্যাস মুক্ত হয়। ফলে এই গোবর সরাসরি আপনি গাছে ও পুকুরে মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়া আপনারা গোবর দিয়ে জৈব সার তৈরি করতে পারবেন। আরো বিভিন্ন ধরনের জৈব উপাদান তৈরি করা যায়। যেগুলো জানতে চাইলে আপনারা কৃষি অধিদপ্তরে যোগাযোগ করতে পারেন। তারা আপনাকে সকল কিছু বিস্তারিত নিয়ম ও উপায় বলে দিবে। আপনারা চাইলে গোবর থেকে গ্যাস দূর করে , পুকুরে খৈল এর সাথে গোবর মিশিয়ে প্রয়োগ করতে পারেন। তবে কম পরিমাণে প্রয়োগ করতে হবে।

মাছের প্রাকৃতিক খাবার তৈরির পদ্ধতি

আপনারা যারা কম করে যে মাসের জন্য প্রাকৃতিক খাবার তৈরি করতে চান তারা অবশ্যই এই পোস্টের এই অংশটি গুরুত্ব সহকারে পড়ুন। কারণ আমরা এখন মাছের প্রাকৃতিক খাবার তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করব। সাধারণ পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য জন্মে থাকে। তাই পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য বৃদ্ধি বা জন্মানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ও জৈব সার প্রয়োগ করতে হয়। পুকুর প্রস্তুত করার পর প্রতি ১৫ দিন অন্তর জৈব সার প্রয়োগ করতে হয়। এর ফলে পুকুরে প্রাকৃতিক খাবার তৈরি হয়। চলুন নিম্নে পুকুরে মাছের প্রাকৃতিক খাবার তৈরির জন্য সার প্রয়োগ পদ্ধতি জেনে নেই।

সার বা উপাদান

  প্রতি শতাংশে পরিমাণ

গোবর সার

৬-৭ কেজি

কম্পোস্ট সার

৮-৯ কেজি

ইউরিয়া সার

২০০ গ্রাম

টিএসপি সার

১০০ গ্রাম

উপরে চাটে দেওয়া সারগুলো ভালোভাবে পুকুরে পানিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। তাছাড়া পুকুরে মাছের পোনা ছাড়ার পর কিছু সার প্রয়োগ করতে হয়। এই সারগুলো পোনা ছাড়ার ১৫ দিন পর প্রয়োগ করতে হয়। সেগুলো হলোঃ গোবর সার ১ কেজি , ইউরিয়া সার ৫০ গ্রাম , এবং টিএসপি সার ৩০ গ্রাম হারে পুকুরের পানিতে প্রয়োগ করতে হয়।

কার্প জাতীয় মাছের খাদ্য তালিকা

আপনি কি কার্প জাতীয় মাছ চাষ করতে চাচ্ছেন। তাহলে অবশ্যই আপনাকে কার্প জাতীয় মাছের খাদ্য তালিকা সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে কাপ মাছের খাদ্য তালিকা কি কি জানা যাক। তবে সাধারণত কার্প জাতীয় মাছের ক্ষেত্রে খাদ্য তালিকায় ২৫ পার্সেন্ট আমিষ ও প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখতে হয়।
তাহলে আশা করছি আপনারা উপরের ছবিতে কার্প জাতীয় মাছের খাদ্য তালিকা গুলো জানতে পারলেন। আপনারা নিয়ম অনুযায়ী মাছের খাদ্য প্রয়োগ করবেন তাহলে মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা মাছের খাদ্য তৈরির ফর্মুলা ও রুই মাছের খাদ্য তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে গেছেন। তাছাড়া আরও মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে যা জেনে আপনারা কম খরচেই মাছের খাদ্য তৈরি করতে পারবেন। এছাড়াও মাছের খাদ্য তৈরির উপায় সমূহ বিস্তারিত পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে , আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে সকল কিছু বুঝতে পারবেন। আপনাদের পরিচিতদের মাছের খাদ্য তৈরির ফর্মুলা সম্পর্কে জানাতে পোস্টটি শেয়ার করুন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url