Telegram group

ordinarybdgnews

গরম ভাতে ঘি খাওয়ার ১০টি উপকারিতা জেনে নিন

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা গরম ভাতে ঘি খেতে পছন্দ করেন। তারা নিশ্চয়ই গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতেই আজকের এই পোস্টটিতে এসেছেন। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই আজকে এই পোস্টটিতে আমরা আপনাদের জন্য গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা ও ঘি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করব।
গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা
পোস্টসূচিপত্রঃআপনারা অনেকেই প্রতিদিন সকালে ভাতের সাথে ঘি খেয়ে থাকি যা আপনাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। যা জানলে সবাই খেতে শুরু করবেন। ঘিয়ের পুষ্টিগুণ বলে বোঝানো যাবে না। আপনি যদি ঘি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের পোস্টটিতে আমরা গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা ও ঘি পুষ্টিগুণ সম্পর্কিত সকল কিছু আলোচনা করার চেষ্টা করব।

ভূমিকা ।গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা 

ঘি সাধারণত গরু বা মহিষের দুধ থেকে তৈরি করা হয়। ঘি বা মাখন আমরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে তৈরি করতে পারি। আমরা সকলেই জানি স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি খাবার হিসেবে ঘি এর জনপ্রিয়তা অধিক। ঘি তে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর উপাদান ও পুষ্টিকর উপাদান যা আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে বজায় রাখে। এবং বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ঘাটতি থেকে রক্ষা করে। 

তাই প্রতিদিন ঘি খাওয়া সকলের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। এছাড়া আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে যা আমরা আজকের পোস্টটিতে গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা কি সম্পর্কে আলোচনা করব। তাই ঘি নিয়ে মনে যত প্রশ্ন আছে তা সবকিছু পোস্টটিতে আলোচনা করা হবে।

প্রতিদিন ঘি খাওয়ার উপকারিতা

ঘি খাওয়ার যে কত উপকারিতা রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না। ঘি কে আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে উপকারিতা দিক দিয়ে পুষ্টিগুণের শীর্ষে রাখা হয়েছে। প্রতিদিন ঘি খাওয়া হলে স্বাস্থ্য যেমন ভালো থাকে তেমনি শরীর ও মন এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। এছাড়াও ঘি খেলে আরো অনেক উপকারিতা পাওয়া যায় যা কিনা আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না চলুন আর কথা না বাড়িয়ে উপকারিতা গুলো জেনে নেই।

শক্তি বৃদ্ধিঃ ঘি যে শুধু আমাদের স্বাস্থ্য বজায় রাখে তা কিন্তু নয় এর সাথে সাথে এটি আমাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। আপনারা যদি শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করতে চান তাহলে নিয়মিত প্রতিদিন ঘি খাওয়া শুরু করতে পারেন। কারণে ঘি আমাদের দেহে পুষ্টি উপাদান দিয়ে থাকে। আপনারা গরম ভাতের সঙ্গে এক চামচ ঘি মিশিয়ে খেতে পারেন। তবে জেনে রাখা ভালো ঘি তে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফ্যাট আপনাদের বুঝে শুনে খাওয়া উচিত তাই ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে, ঘি পরিমাণ মত খাবেন অতিরিক্ত খেলে উল্টো ওজন বেড়ে যেতে পারে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও ঘি সাহায্য করে থাকে। কারণ ঘি তে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ডি , ভিটামিন কে, ভিটামিন এ সহ আরো অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা আমাদের দেহের শারীর ওবৃত্তীয় কাজগুলোতে সাহায্য করে।

হজম শক্তি বৃদ্ধিঃ ঘি আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কারণ এতে রয়েছে ফ্যাটি এসিড যা দেহের অন্যান্য কোষগুলো শক্তির উৎস হিসেবে এই এসিড ব্যবহার করে। অন্তর প্রাচীর গুলোকে শক্তিশালী করতে এবং হজম সাহায্য করতে ভূমিকা পালন করে এই ফ্যাটি অ্যাসিড যা মূলত ঘিতে পাওয়া যায়।

স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধিঃ আমাদের চিন্তা শক্তিকে বৃদ্ধি করতে ঘি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ এতে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাটগুলো আমাদের চিন্তাশক্তি ও মেধা শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে অর্থাৎ বাড়িয়ে তোলে। তাই আপনি যদি প্রতিদিন সকালে গরম ভাতের সাথে ঘি খান তাহলে এটি আপনার বুদ্ধি বিকাশে সহায়তা করবে এবং স্বাস্থ্য উন্নত করবে।

পানির অভাব দূর করেঃ ঘি আমাদের সকলের শরীরের আদ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। ঘিতে রয়েছে ময়েশ্চারাইজিং গুণ যা শরীরকে ভিতর থেকে আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। দেহে পানির অভাব দেখা দিলে পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং এর সাথে ঘি খেতে পারেন। কারণ ঘি আমাদের ত্বককে উজ্জ্বল করে এর কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিভাইরাল গুণ যা ত্বকের স্বাস্থ্যে ভূমিকা পালন করে। তবে আপনারা আরো উপকার পেতে হলুদের সাথে ঘি মিশিয়ে খেতে পারেন তাতে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

ত্বক উজ্জ্বল ও সুন্দর রাখেঃ ঘি আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির সাথে সাথে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ উপাদান যা আপনারা ঘি খেলে পেতে পারেন। এছাড়াও এটি ত্বক থেকে জীবাণু পদার্থ বের করে দেয় এবং ত্বকের জ্বালা কম করে তবে জানা গেছে এটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসাবে ভালো কাজ করে যা আপনার ত্বককে সুন্দর রাখতে সহায়তা করে।

শরীর ঠান্ডা রাখেঃ শরীর ও মনে শীতলতা আনতে চাইলে আপনারা ঘি খেতে পারেন। কারণ গবেষণা দেখা গেছে ঘি আমাদের শরীর ও মন শীতল করে এবং এক ধরনের শান্তি অনুভব করায়। শরীরকে শিথিল রাতে সাদা করে এছাড়াও দেহের প্রদাহ কমায়। এজন্য আপনারা বছরে যেকোনো সময়ে ঘি খেতে পারেন যাতে করে আপনার শরীর ও মন শীতলতা অনুভব করে।

গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা

বর্তমানে এখন শীতকাল পড়েছে। এই সময়ে গরম ভাতের সাথে ঘি খাওয়ার মজাটাই আলাদা। যারা আপনারা খেয়েছেন তারা হয়তো বুঝতে পেরেছেন এই সময়ে ঘি খেলে কি কি উপকার হয়। গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা সমূহঃ
  • আপনি যদি শরীরে শক্তি বাড়াতে যান এবং ক্লান্তি দূর করতে চান তাহলে নিয়মিত ঘি খেতে পারেন বিশেষ করে গরম ভাতের সাথে ঘি খেলে তার উপকারিতা অনেক।
  • নিয়মিত ঘি খেলে আমাদের শরীরে পুষ্টি ঘাটতি পূরণ হয় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা বেড়ে যায়।
  • এছাড়াও ঘি খেলে যাদের ত্বক উজ্জ্বল করতে চান এবং সুন্দর করতে চান তাদের ক্ষেত্রে আপনি নিয়মিত গরম ভাতের সাথে ঘি খেতে পারেন।
  • বর্তমানে শীতকালে ঘি গরম ভাতের সাথে খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। এতে করে আপনার শরীর ভালো থাকবে এবং গা গরম থাকবে। তাই আপনি নিয়মিত গরম ভাতের সাথে ঘি খেতে পারেন তাতে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং ত্বকের মোশ্চারাইজ হবে।
  • এছাড়াও আপনারা বুদ্ধির বিকাশে বা চিন্তাশক্তি বৃদ্ধিতে নিয়মিত গরম ভাতের সাথে ঘি খেতে পারেন। কারণে এতে থাকা পুষ্টিকর উপাদান আমাদের শুধু স্বাস্থ্যই নয় বরং আমাদের মস্তিষ্কে চিন্তাশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।
  • ঘিতে থাকা ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি , ভিটামিন কে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই থেকে রক্ষা করে।
  • শীতকালে বিশেষ করে যাদের ঠান্ডা কাশি লেগে থাকে তারা প্রতিদিন সকালে গরম ভাতের সাথে ঘি খেলে তাদের ঠান্ডা কাশি দূর হয়ে যাবে এবং অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগা থেকে বাঁচতে পারবে।
  • তবে নিয়মিত ঘি খাওয়া চুল, ত্বক, হাড়ের স্বাস্থ্য খুবই উপকারী এবং দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সহায়তা করে এই ঘিতে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান।

ঘি খাওয়ার নিয়ম

ঘি খাওয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে অতিরিক্ত খাওয়া হলে উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে। তাই পরিমাণ মতো নিয়ম মেনে ঘি খেতে হবে। আপনার যদি চুল পড়া সমস্যা থাকে তাহলে আপনি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে গরম পানির সাথে এক চামচ ঘি মিশিয়ে খেতে পারেন এতে করে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চুলের স্বাস্থ্য বলে থাকবে। তবে ঘি খাওয়ার এক ঘন্টা পর সকালের নাস্তা করতে পারে। 

এছাড়াও খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি সহ খাবারের পুষ্টিগুণ গুনাগুন বজায় রাখতে রান্নার সাথে যে কোন সবজির সাথে ঘি ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে রান্নার তরকারি পুষ্টি বহু গুনে বেড়ে যায়। তাই আপনারা রান্নার সাথে ঘি ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও সকালের নাস্তা অথবা বিকালের নাস্তায় রুটি অথবা পাউরুটি এর সাথে অল্প পরিমাণ ঘি মিশিয়ে খেতে পারেন , এতে করে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি পায় সাথে খাবারের পুষ্টি বজায় থাকে। 

এছাড়াও রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধের সাথে এক চা চামচ ঘি মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে আপনার দুধের পুষ্টি উপাদানের সাথে মিশে আরও গুনাগুন বাড়িয়ে তোলে যা আপনার স্বাস্থ্যর জন্য অনেক উপকারী ও কার্যকরী। এছাড়াও আপনারা ঠান্ডা কাশি থেকে বাঁচতে প্রতিদিন সকালে গরম ভাতের সাথে এক চামচ ঘি নিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনার ঠান্ডা কাশি দূর হয়ে যাবে।

বাচ্চাদের ঘি খাওয়ার নিয়ম ।ঘি খাওয়ার নিয়ম

অবশ্যই আপনাদের বাচ্চাদের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করতে ঘি খাওয়াতে পারেন। তবে তো কিছু নিয়ম মেনে খাওয়াতে হবে। বাচ্চাদের বয়স ও ওজনের ওপর নির্ভর করে কি খাওয়াতে হবে। আপনার বাচ্চার বয়স যদি ছয় মাসের কম হয় তাহলে ঘি খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই। তবে আপনারা বাচ্চার বয়স ৬ মাসের বেশি হলে অল্প করে এক চামচ এরকম পরিমাণ ঘি খাওয়াতে পারেন। বাচ্চা যখন খাওয়া শুরু করে তখন বিভিন্ন খাবারের সাথে ঘি মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। 

বাচ্চার বয়স যদি আট মাসের বেশি হয় তাহলে আপনি বাচ্চাকে এক চা চামচ ঘি খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন।তবে ঘি খাওয়ানোর পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে যেমন প্রথমে এক চামচ দিয়ে শুরু করবেন এবং আস্তে আস্তে দুই থেকে তিন চামচ ঘি খাওয়াতে পারেন। তবে মনে রাখা ভালো শিশু বা বাচ্চার ওজন যদি কম হয়ে থাকে তাহলে ঘি বেশি পরিমাণে খাওয়াতে পারেন অর্থাৎ দুই চামচ পরিমাণ খাওয়াতে পারেন। 

আর বাচ্চার ওজন বেশি হলে একটু কম পরিমাণ ঘি খাওয়াতে হবে। বাচ্চাদের শক্তি বাড়াতে অর্থাৎ শরীরে ক্যালরি পরিমাণ বাড়াতে খাবারের সাথে ঘি মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। বিশেষ করে বাচ্চার ওজন ঠিক রাখতে ৬ মাস বয়সের পর থেকে গিয়ে খাওয়ানো শুরু করতে পারেন। আপনার শিশুকে সুস্থ রাখতে এবং ঠান্ডা কাশি থেকে বাঁচাতে ঘি খাওয়াতে পারেন বিশেষ করে শিশুর বয়স যদি এক বছরের বেশি হয় তাহলে বেশি করে ঘি খাওয়াতে পারেন যাতে করে রোগ বালাই থেকে মুক্তি পায় এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

খাঁটি ঘি চেনার উপায় । ঘি খাওয়ার নিয়ম

বর্তমানে বাজারে অনেক নকল ঘি বেরিয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি দামে এই নকল ঘি বিক্রি করে থাকে। এর থেকে বাঁচার জন্য আমাদের খাঁটি ঘি চেনার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। যা আমরা এখন আলোচনা করব। বর্তমানে অসাধু ব্যবসায়ীরা ঘি এর সাথে বাটার ওয়েল, রিফাইন তেল ও ডালডা মিশিয়ে নকল ঘি তৈরি করছে। যার ফলে ঘিতে কোন স্বাদ পাওয়া যায় না বরং পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি থাকে।

খাঁটি ঘি চিনতে আপনারা ছোট স্টিলের বাটিতে এক চামচ ঘি তাতে নিয়ে গরম করতে থাকুন। যদি দেখতে পান ঘি তৎক্ষণাৎ গলে তরল হয়ে যায় এবং বাদামী বর্ণ ধারণ করে তাহলে বুঝবেন এটি খাঁটি ঘি। আর যদি ঘি গলতে সময় লাগে এবং ঘি এর বর্ণ হলুদ কালার হয় তাহলে বুঝবেন এটি ভেজাল ঘি। আরেকটি পদ্ধতি হলো এক চামচ ঘি আপনার হাতে তালিতে নিন এবং আপনার হাতের তালুতে ঘি নেওয়া হলে সংস্পর্শে যদি সাথে সাথে ঘি গলে যায় তাহলে বুঝবেন এটি খাঁটি ঘি। আর যদি না হয় তাহলে এতে ভেজাল রয়েছে।

আরেক নিয়মে আপনারা একটি কাঁচের বয়মে ঘি নিয়ে নিয়ে গরম পানির পাত্রের মধ্যে রাখুন। ঘি গলে গেলে সেটি ফ্রিজের মধ্যে রাখুন। ফ্রিজে রাখার পর কিছুক্ষণ পর দেখবেন কাচের বয়ামে যদি ঘি এর একটি স্তর পরে তাহলে বুঝবেন এটি খাঁটি ঘি আর যদি দুটি স্তর দেখা যায় তাহলে বুঝবেন এখানে একটি ঘি এ স্তর আর দ্বিতীয়টি নারিকেল তেলের স্তর। অর্থাৎ এই ঘিতে ভেজাল রয়েছে।

এছাড়াও আপনারা আরো সহজে আয়োডিন টেস্টের মাধ্যমে বুঝতে পারবেন কোন ঘিতে ভেজাল রয়েছে। সামান্য পরিমাণ একটি পাত্রে ঘি নিয়ে তাতে ২ চামচ আয়োডিন মিশিয়ে দিন। মেশানো হয়ে গেলে যদি দেখতে পান আয়োডিন বেগুনি কালার ধারণ করছে তাহলে বুঝবেন এটিতে ভেজাল মেশানো রয়েছে অর্থাৎ খাঁটি ঘি নয়। এছাড়া আপনারা হাতের তালুতে ঘি নিয়ে রেখে দেখতে পারেন এটি যদি শরীরের তাপমাত্রায় গলে যায় তাহলে এটি খাঁটি ঘি আর যদি গলতে সময় লাগে তাহলে বুঝবেন ভেজাল রয়েছে।

গাওয়া ঘি এর উপকারিতা । গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা 

বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের ভেজাল ঘি বের হয়েছে। যাতে কোন স্বাদ অথবা গন্ধ নেই এবং খেয়ে শান্তি পাওয়া যায় না। আর এতে কোন ধরনের পুষ্টি উপাদানও পাওয়া যায় না। তবে আপনার নজর যদি খাঁটি ঘি এবং স্বাদ পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার গাওয়া ঘি নির্বাচন করা উচিত। আপনি যদি ভেজাল মুক্ত ও সবচেয়ে পরিশুদ্ধ ঘি খেতে চান তাহলে আপনার পছন্দের তালিকায় গাওয়া ঘি রাখা উচিত। গাওয়া ঘি মূলত সরাসরি গরুর দুধ থেকে তৈরি করা হয়। 

এটি সরাসরি গরু থেকে দুধ নিয়ে চুলায় জ্বাল দিয়ে ঘি বানানো হয়। এতে কোন ধরনের ভেজাল থাকে না। সবচেয়ে পরিশুদ্ধ ঘি বলতে গেলে এই গাওয়া ঘি এর উপকারিতা অধিক যা বলে শেষ করা যাবে না। সেই আদি যুগ থেকে পুষ্টির বিচার এর দিক দিয়ে গাওয়া ঘি সবার পছন্দের তালিকায় রয়েছে। অনেকেই ওজন বেশি হওয়ার কারণে ঘি খেতে চান না। তবে আপনি জানেন কি ঘিতে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড যা আমাদের দেহের কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণ রাখে এবং আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে।
বিশেষ করে আপনি যদি খাঁটি গাওয়া ঘি খান। কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন ডি সহ আরো অনেক পুষ্টি উপাদান যা আপনার দেহের হারকে মজবুত এবং পাচনতন্ত্রের উন্নতি করতে সহায়তা করে। এছাড়া এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে দারুনভাবে কার্যকরী। তবে আপনার চুল পড়া যদি বন্ধ করতে চান তাহলে নিয়মিত গাওয়া ঘি খেতে পারেন। এছাড়া ত্বকের যত্নে গাওয়া ঘিয়ের তুলনা নেই। এটি ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ভূমিকায় পালন করে। আপনারা অনেকেই প্রশ্ন করেন গাওয়া ঘি কোথায় পাওয়া যায়। এই গাওয়া ঘি সচরাচর বেশি পাওয়া যায় না সাধারণত গ্রামের দিকে পেতে পারেন। তবে পাওয়া গেলেও দাম বেশি।

খাঁটি ঘি এর বৈশিষ্ট্য

খাঁটি ঘি এর বৈশিষ্ট্য রয়েছে তা জানা গুরুত্বপূর্ণ যদি আপনি ভেজাল ঘি না খেতে চান। কারণ ভেজাল ঘি এর বৈশিষ্ট্য রয়েছে এর সাথে খাটি ঘি চেনার বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
  • খাটি ঘি গরম পাত্রে রাখলে সাথে সাথে গলে যাবে এবং বাদামি বর্ণ ধারণ করবে। আর যদি গলতে সময় লাগে এবং হলদি বর্ণ ধারণ করে তাহলে এটি ভেজাল ঘি।
  • খাটি ঘি এর গন্ধ ও স্বাদ আলাদা হয় যা আপনারা খেলে বুঝতে পারবেন। আর ভেজাল ঘি এর তেমন গন্ধ পাওয়া যায় না এবং স্বাদ পাওয়া যায়।
  • খাটি ঘিতে আয়োডিন মেশালে আয়োডিনের রং পরিবর্তন হবে না আর ভেজাল ঘিতে মেশালে রং পরিবর্তন হয়ে নীল রং হয়।
  • খাটি ঘিতে চিনি মেশালে রং পরিবর্তন হয় না বরং ভেজাল ঘি এর ক্ষেত্রে চিনি মেশালে রং বেগুণী ধারণ করে।
  • খাঁটি ঘি ফ্রিজে সংরক্ষণ করলে কোন স্তর পড়বে না আর ভেজাল ঘি সংরক্ষণ করলে বিভিন্ন ধরনের স্তর পড়ে।
  • খাঁটি ঘি হাতের তালুতে রাখলে সাথে সাথে গলে যায় এবং ভেজাল ঘি রাখলে তা সহজে গলে না।

ঘি এর ক্ষতিকর দিক

আপনি যদি পরিমাণ এর চেয়ে বেশি পরিমাণ ঘি খেয়ে ফেলেন তাহলে উপকারের চেয়ে অপকারিতাই বেশি পাবেন। সব জিনিসই খাওয়ার কিছু নিয়ম অর্থাৎ বেশি না কম পরিমাণ মতো খেতে হবে।তেমনি ভাবে ঘি পরিমাণ মত খেলে উপকার পাওয়া যায়। আর যদি অতিরিক্ত পরিমাণ খান তাহলে আপনার ওজন বৃদ্ধি সহ, ডায়রিয়া ও আমাশয় দেখা দিতে পারে।

এছাড়া অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাব হতে পারে। ঘি তে রয়েছে উচ্চ স্যাচুরেটেড ফ্যাট সামগ্রী যা আপনার হার্টের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে অতিরিক্ত পরিমাণ ঘি খাওয়া কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। আমার ঘিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি যা আমাদের দেহের ক্যালরি চাহিদা পূরণ করে দেহের ওজন বৃদ্ধি করে থাকে। 

তাই পরিমাণ মতো ঘি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তাহলে ভালো উপকার পাবেন। বিশেষকদের মতে ঘি অধিক পরিমাণ খেলে আমাদের দেহে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলে যা আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর। তবে ভুল ধারণা ঘি যদি পরিমাণ মতো খাওয়া হয় তাহলে উপকার বেশি পাওয়া যায়। বিশেষ করে আপনার স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে নিয়মিত ঘি খাওয়া শুরু করতে পারেন। উপরের যেগুলো ক্ষতিকর দিকগুলো দেখলেন সেগুলো শুধুমাত্র ঘি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে হয়ে থাকে।

রাতে ঘি খেলে কি হয় ।ঘি খাওয়ার নিয়ম

রাতে ঘি খেলে বিশেষ তেমন কিছু হয় না যেমন উপকার পাওয়া যায় তেমনি হয়। আপনি যদি রাতে ভাতের সঙ্গে ঘি খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে এর সাথে সাথে রাতের ঘুম ভালো হবে এবং ধীরে ধীরে দেখতে পাবেন ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া যাদের ছোট বাচ্চা রয়েছে তাদের রাতের বেলা ঘি খাওয়াতে পারেন এতে করে তাদের বুদ্ধি বিকাশ হবে এবং দৈহিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়া আপনি আপনার ওজন বৃদ্ধিতে রাত্রে প্রতিদিন ঘি খেতে পারেন।

গাওয়া ঘি এর দাম

গাওয়া ঘি বলতে এখানে খাঁটি ও পরিশুদ্ধ আসল ঘি কে বোঝানো হয়েছে। আপনারা যারা খাঁটি ও পরিশুদ্ধ ভেজালমুক্ত ঘি কিনতে চান তারা অবশ্যই গাওয়া ঘি এর নাম শুনেছেন। আপনারা অনেকেই এই গাওয়া ঘি এর দাম জানতে চেয়েছেন চলুন জেনে নেই। এক কেজি গাওয়া ঘি এর দাম ১৭০০ টাকা।
তবে অর্গানিক এবং খাটি ঘি এর দাম ১০০০ টাকা। 
আর যদি আপনি পাবনার খাটি ঘি কিনতে চান তাহলে এর দাম পড়বে ১২০০ টাকা প্রতি কেজি। আর বাড়িতে তৈরি করা ঘি কেনার জন্য দাম পড়বে ১,৬৫০ টাকা প্রতি কেজি। যা আপনারা বিভিন্ন ধরনের অনলাইন প্লাটফর্মে অথবা ঘি তৈরি করার কারখানায় পেয়ে যাবেন।

শেষ কথা 

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা ঘি সম্পর্কিত সকল কিছু বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এবং ঘি কেন খাবেন এবং তার উপকারিতা সহ অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। ঘি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য সোনার মতো দামি খাবার। তাই আপনারা প্রতিদিন খাবারের সাথে ঘি মিশিয়ে খেতে পারেন। তাছাড়া বাচ্চাদের ও শিশুদের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে দৈহিক বৃদ্ধিতে ঘি খাওয়াতে পারেন। আশা করছি পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে। ঘি এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানাতে পোস্টটি শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url